You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর বিক্রম আব্দুর রহিম - সংগ্রামের নোটবুক

বীর বিক্রম আব্দুর রহিম

আব্দুর রহিম, বীর বিক্রম (১৯৫২-১৯৭১) একজন বীর সৈনিক ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের খেওড়া গ্রামে। তাঁর পিতার নাম খােরশেদ মিয়া ও মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। ৬ ভাই ও ৩ বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
আব্দুর রহিম ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম ইবিআরসি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে যােগদান করেন। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। বিভিন্ন প্রতিরােধ যুদ্ধে তিনি রেজিমেন্টের সঙ্গে থেকে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। অস্ত্র ও গােলাবারুদের সংকটের কারণে প্রতিরােধ যুদ্ধে পিছু হটে তারা হরিণা হয়ে ভারতের তেলঢালায় অবস্থান নেন। এসময় আব্দুর রহিম ‘জেড’ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত হন। ‘জেড’ ফোর্সের সৈনিক হিসেবে তিনি সুবেদার আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধে লড়াই করেন। অক্টোবর মাসে তার কোম্পানিকে রংপুরের চিলমারীতে পাঠানাে হয়। ১৭ই অক্টোবর মুক্তিযােদ্ধারা চিলমারীতে পাকবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটিগুলাে আক্রমণ করেন। সুবেদার আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে আব্দুর রহিম তার কোম্পানির সঙ্গে এ আক্রমণে অংশ নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে পাকসেনারা পিছু হটে তাদের সুরক্ষিত ওয়াপদা ঘাঁটিতে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনীর এ ঘাঁটিতে একটি শক্তিশালী মেশিনগান পােস্টের কারণে বেশ কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধ করেও মুক্তিযােদ্ধারা সেটি দখল করতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে আব্দুর রহিম দৃঢ় মনােবল ও সাহস নিয়ে মেশিনগান পােস্টের খুব কাছে পৌঁছে গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রস্তুতি নেন। ঠিক সেই মুহূর্তে শত্রুপক্ষের ব্রাশফায়ারে তিনি শাহাদত বরণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান ও আত্মােৎসর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আব্দুর রহিমকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। আব্দুর রহিম ছিলেন অবিবাহিত। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড