বীর প্রতীক আবদুস সালাম
আবদুস সালাম, বীর প্রতীক (১৯৫৩-১৯৭১) বীর মুক্তিযােদ্ধা। তিনি ১৯৫৩ সালে নাটোর জেলার বাঘাতিপাড়া থানার দয়ারামপুর ইউনিয়নের দোপাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম খন্দকার আবুল কাসেম এবং মাতার নাম ফাতেমা বেগম। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
তরুণ আবদুস সালাম কর্মজীবনের শুরুতে মুজাহিদ বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং এ বাহিনী থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যােগ দেন। সিপাহি হিসেবে আবদুস সালাম যশাের সেনানিবাসে নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে তাঁকে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য যশাের সেনানিবাস থেকে চট্টগ্রামস্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার (ইবিআরসি)-এ পাঠানাে হয়। আবদুস সালাম অন্য বাঙালি সৈনিকদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেখানে প্রতিরােধ যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি কালুরঘাট, কুতুবছড়ি, মহালছড়ি, হেঁয়াকো ইত্যাদি স্থানে প্রতিরােধ যুদ্ধে লড়াই করেন।
এরপর আবদুস সালাম ভারতে গিয়ে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত হন। এ রেজিমেন্টের সৈনিক হিসেবে তিনি ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। জুলাই মাসে ‘জেড’ ফোর্স গঠিত হলে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল ব্যাটালিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত হয়। আবদুস সালাম এ ব্যাটালিয়নের সৈনিক হিসেবে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। জামালপুর জেলার নকশী বিওপিতে পাকবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। মুক্তিযােদ্ধারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকসেনাদের এ ঘাঁটিতে আক্রমণ করেন। আবদুস সালাম এ আক্রমণে অংশ নিয়ে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধরত অবস্থায় হানাদারদের গুলিতে শহীদ হন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আবদুস সালামকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয় (গেজেট নম্বর ৪১৭, খেতাবের সনদ নম্বর ১৬৭)। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড