You dont have javascript enabled! Please enable it! 'মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা' প্রাপ্ত ভারতের লেখক ও সমাজসেবী আজগর আলী ইঞ্জিনিয়ার - সংগ্রামের নোটবুক

আজগর আলী ইঞ্জিনিয়ার

আজগর আলী ইঞ্জিনিয়ার (১৯৩৯-২০১৩) ভারতের লেখক ও সমাজসেবী। তিনি ১৯৩৯ সালের ১০ই মার্চ অবিভক্ত ভারতের রাজস্থানের উদয়পুর জেলার সালুমবার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বােম্বে পৌর করপােরেশনের প্রকৌশলী হিসেবে দীর্ঘ ২০ বছর কাজ করার পর ১৯৭২ সালে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং বােহরা সংস্কার সাধন আন্দোলনে নিজেকে নিয়ােজিত করেন। ১৯৭৭ সালে উদয়পুরে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে তিনি দাউদী বােহরা কমিউনিটির কেন্দ্রীয় বাের্ডের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি মুম্বাইয়ে ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক স্টাডিজ (১৯৮০) ও সেন্টার ফর স্টাডি অব সােসাইটি অ্যান্ড সেকুলারিজম (১৯৯৩) প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান দুটির প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও তিনি ৫০টির অধিক পুস্তক রচনা করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য কয়েকটি হলাে Rights of Women in Islam (1992), Rethinking Issues in Islam (1998), Islam Misgivings and History (2008), Islam Restructuring Theology (2012) ইত্যাদি। তাঁর আত্মজীবনীমূলক A Living Faith : My Quest for Peace, Harmony and Social Change : An autobiography of Asghar Ali Engineer পুস্তক দুটি ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিষয়ে বিশ্বব্যাপী বক্তৃতা প্রদান করতেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৯৯৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। তিনি ২০১৩ সালের ১৪ই মে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে ভারতের মহারাষ্ট্রের জনগণকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত মানবতা ও ইসলাম পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন। তাছাড়া তিনি শরণার্থীদের জন্য অর্থসংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশের আয়ােজন করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১লা অক্টোবর ২০১৩ সালে ড. আজগর আলী-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণােত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]।

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড