আগলা যুদ্ধ (নবাবগঞ্জ, ঢাকা)
অক্টোবর মাসের শেষদিকে সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে ৬-৭ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। এবং কয়েকজন সাধারণ গ্রামবাসী শহীদ হন।
পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হােসেনের নির্দেশে ঢাকা থেকে হানাদার বাহিনীর একটি দল নদীপথে লঞ্চযােগে আগলার পুরাতন খালের কুমের পাড় নামক স্থানে পৌঁছায়। নবাবগঞ্জ থানা কমান্ডার শওকত হােসেন আঙ্গুরের নেতৃত্বে ৭ জন মুক্তিযােদ্ধার একটি গ্রুপ তাদের প্রতিরােধের চেষ্টা করে। গ্রাম বাংলার অন্যান্য এলাকার মতাে এ এলাকায় তখন আমন ধান কাটার মৌসুম চলছিল। বর্ষার পানি প্রায় শেষ হওয়ায় খালে তখন নৌকা চালানাে কঠিন। এ-সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের বহনকারী লঞ্চটি আগলা খালের কুমের পাড় বটতলা নামক স্থানে এসে থামে এবং সৈন্যরা নেমে যায়। তারা জল-কাদা পার হয়ে পেশকার বাড়ি পৌঁছলে পােদ্দার বাড়ি ও জেলে বাড়িতে অবস্থানরত মুক্তিযােদ্ধাদের গ্রুপটি তাদের প্রতিরােধ করে। মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতিরােধের মুখে অধিকাংশ পাকসেনা পলায়ন করে এবং এ-সময় তারা ৮ জন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।
পাকসেনাদের পলায়নের সময় তাদের বহনকারী কয়েকটি নৌকা মুক্তিযােদ্ধারা ডুবিয়ে দেন। অতঃপর উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে ৬-৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকসেনারা নবাবগঞ্জ পালিয়ে যাবার সময় পথে ইছামতি নদীর চৌকিঘাটা জনমঙ্গল হাইস্কুলের সন্নিকটে আরাে ৩-৪ জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। এ-যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডার শওকত হােসেন আঙ্গুরের নেতৃত্বে শাহ মাে. আবু বকর সিদ্দিক, জাহাঙ্গীর হােসেন, মােহাম্মদ মন্নাফ, মাে. হাফিজ, মাে. সাগর, গােলাম হােসেন, আবুল সুবেদার রাহাত আলী, জমাদার আব্দুর রউফ, সিপাহি শাকিল, আ. মজিদ সহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা অংশ নেন। [মাে. আনােয়ার হােসেন ও আব্দুল মালেক সিকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড