আক্কেলপুর জিন্না জুনিয়র ওল্ড স্কিম মাদ্রাসা নির্যাতনকেন্দ্র
আক্কেলপুর জিন্না জুনিয়র ওল্ড স্কিম মাদ্রাসা নির্যাতনকেন্দ্র (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট) ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালদের আক্কেলপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় ক্যাম্প, বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্র।
২২শে এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল সান্তাহার থেকে রেলযােগে আক্কেলপুরে অনুপ্রবেশ করে। তারা আক্কেলপুর সদরের জিন্না জুনিয়র ওল্ড স্কিম মাদ্রাসায় ক্যাম্প স্থাপন করে। এটি ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালদের আক্কেলপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় ক্যাম্প, বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্র। এটি আমুট্ট মৌজায় অবস্থিত। এখানকার সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাপ্টেন হারুন। জয়পুরহাট মহকুমার দায়িত্বে থাকা মেজর আফজাল বেগ প্রায়ই এখানে এসে অবস্থান করে দিকনির্দেশনা দিত। এ মাদ্রাসা ক্যাম্পে থাকা পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযােগীরা বিশেষ করে জয়পুরহাটের কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরােধী আব্দুল আলিম ও আক্কেলপুর উপজেলার স্থানীয় দালালরা বিভিন্ন অপারেশনের পরিকল্পনা করত। সে অনুযায়ী নিরপরাধ ও মুক্তিকামী মানুষদের ধরে নিয়ে বর্বরােচিত নির্যাতন চালানাে হতাে। নির্যাতিতদের বড় একটি গাছে ঝুলিয়ে শরীর কেটে তাতে লবণ দিয়ে নির্যাতন করত। কখনাে বা বন্দিদের গায়ে খেজুর গাছের কাঁটা ফোটানাে হতাে। রক্তাক্ত শরীরে ব্রাশ ফায়ার করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হতাে। এ মাদ্রাসার মাঠে সে-সময় একটি কূপ ছিল, হত্যার পর যেখানে অনেক মানুষের লাশ ফেলে দেয়া হয়। আক্কেলপুর হানাদারমুক্ত হবার পর কূপটি ভরাট করা হয়। নির্যাতনে মৃত মানুষদের মাদ্রাসার কয়েকশ গজ উত্তর-পশ্চিম দিকে জয়পুরহাট-বদলগাছি সড়কের দক্ষিণ পাশে আমুট্ট গ্রামে একটি গণকবরে পুঁতে রাখা হতাে। এছাড়াও মাদ্রাসার আশপাশের জমিতে অনেক লাশ পুঁতে রাখা হয়েছিল। [রেহানা পারভীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড