অলংকারকাঠি গণহত্যা
অলংকারকাঠি গণহত্যা (স্বরূপকাঠি, পিরােজপুর) সংঘটিত হয় ১১ই মে। এদিন পাকিস্তানি সৈন্যরা স্বরূপকাঠি উপজেলায় অনুপ্রবেশ করে এবং গণহত্যা চালায়। এ গণহত্যায় ১৬ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন।
উপজেলায় অনুপ্রবেশের সঙ্গে-সঙ্গে শর্ষিনার পীর ও মাদ্রাসার ছাত্রসহ রাজাকার-আলবদররা স্বরূপকাঠি লঞ্চঘাটে তাদের সংবর্ধনা জানায়। এরপর হানাদার বাহিনী হিন্দু অধ্যুষিত অলংকারকাঠি গ্রামে প্রবেশ করে। হানাদার বাহিনীর হিন্দু নিধনের অংশ হিসেবে তারা অলংকারকাঠি গ্রামে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। বেলা ১১টার দিকে গ্রামের সাধারণ মানুষ যখন তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত, পাকিস্তানি হানাদারদের আকস্মিক আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। হানাদার বাহিনী গ্রামের বাড়িঘর লুণ্ঠন শেষে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া এদিন পার্শ্ববর্তী সন্ধ্যা নদীতে মাছ ধরতে আসা তিন জেলে জঙ্গলে পলাতে এসে তাদের গণহত্যার শিকার হয়। পাকসেনারা চলে গেলে এলাকাবাসী অজ্ঞাত ৩ জেলেসহ বলরাম দাস, ধ্রুবদাস ও মন্টু লাল দাসকে একই কবরে মাটি চাপা দেয়। হানাদারদের এ গণহত্যায় স্থানীয় রাজাকারও আলবদর-রা সহযােগিতা দেয়। অলংকারকাঠি গণহত্যায় শহীদদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন- অলংকারকাঠি গ্রামের নারায়ণ সরকার, জিতেন ঘােষ, রামচন্দ্র রায়, কৃষ্ণকুমার হালদার, আনু বাড়ৈ, মতি লাল সরকার, মণীন্দ্রলাল চক্রবর্তী (উত্তর কৌরিখাড়া), ফণীভূষণ সমদ্দার (শর্ষিনা), দুই সহােদর মন্টু লাল দাস ও হরিপদ দাস (পিতা ক্ষীরদ চন্দ্র দাস, বানারীপাড়া), বলরাম দাস (ঝালকাঠি), ধ্রুবদাস (পিতা বলরাম দাস, ঝালকাঠি) ও বাসুদেব দাস (ঝালকাঠি)। [হাবিবুল্লাহ রাসেল]।
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১ম খণ্ড