সংবাদ
১৫ই অক্টোবর ১৯৬৮
শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তি দানের আবেদন
(নিজস্ব বার্তা পরিবেশক)
ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ মুজিবর রহমানকে তাঁহার অসুস্থা মাতার সহিত সাক্ষাতের সুযোগদানের উদ্দেশ্যে প্যারোলে মুক্তিদানের জন্য গতকল্য (সোমবার) বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আবেদন পেশ করা হইলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এস, এ, রহমান আবেদনপত্রটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন। বিবাদীপক্ষের কৌসুলি জনাব আবদুস সালাম খান শেখ মুজিবের পক্ষে আবেদন পেশ করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তিদানের জন্য ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান কোন সুপারিশ না করায় বিবাদী পক্ষের কৌঁসুলি বলেন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির মাতার অসুস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁহাকে প্যারোলে মুক্তিদানের জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ দেওয়া উচিত।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ইহার উত্তরে বলেন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ সামরিক বাহিনী কর্তৃক আটক আছেন। সুতরাং এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও তাঁহাদের।
এই পর্যায়ে জনাব আবদুস সালাম খান যুক্তি প্রদর্শন করেন যে, যেদিন হইতে মামলার শুনানী শুরু হইয়াছে সেদিন হইতে অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ ট্রাইব্যুনালের কর্তৃত্বাধীন রহিয়াছে এবং এই ক্ষেত্রে সামরিক বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক মাত্র।
কিন্তু বিচারপতি এস, এ, রহমান বলেন যে, বর্তমান ক্ষেত্রে তাহা প্রযোজ্য নহে। যতক্ষণ আদালতকক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ আছেন, ততক্ষণই তাঁহারা আদালতের তত্ত্বাবধানে আছেন। আদালত কক্ষের বাহিরে চলিয়া গেলে তাঁহাদের সামরিক তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।
জনাব সালাম খান বলেন যে, এইরূপ পরিস্থিতিতে জনৈক রাজসাক্ষীর মায়ের অসুস্থতার সময় তাঁহাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হইয়াছে। সুতরাং সেই যুক্তি এখানেও প্রযোজ্য হইতে পারে।
এ সম্পর্কে চেয়ারম্যান বাদীপক্ষের প্রধান কৌসুলি জনাব মঞ্জুর কাদিরের মতামত জানিতে চাহিলে তিনি বলেন যে, এই সম্পর্কে কি করা যায় তাহা তিনি দেখিবেন। তিনি আরও বলেন, “আমার সন্দেহ নাই যে, এই সম্পর্কে কিছু করা যাইতে পারে।”
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু চতুর্থ খণ্ড: ষাটের দশক ॥ তৃতীয় পৰ্ব ॥ ১৯৬৮