You dont have javascript enabled! Please enable it! 1968.01.24 | রাজবন্দী মুক্তির দাবীতে পীর হাবিবুর রহমানের বিবৃতি | সংবাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংবাদ
২৪শে জানুয়ারি ১৯৬৮
রাজবন্দী মুক্তির দাবীতে পীর হাবিবুর রহমানের বিবৃতি
(নিজস্ব বার্তা পরিবেশক)

পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে আটক সকল রাজবন্দীর আশু মুক্তি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবর রহমানের বিচার প্রকাশ্যে নিয়মিত আদালতে অনুষ্ঠানের জন্য এবং তাঁহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সকল সুযোগ প্রদানের দাবী জানাইয়া গত সোমবার পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান একটি বিবৃতি প্রদান করেন। (বিবৃতির একাংশ গতকল্য প্রকাশিত হইয়াছে)।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সম্প্রতি দেশরক্ষা আইনে বন্দী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমানকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্রের সহিত জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর আইনে গ্রেফতার করা হইয়াছে বলিয়া সরকারী প্রেসনোটে প্রকাশ। শেখ মুজিবর রহমান বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্রের সহিত জড়িত ছিলেন কি-না উহা প্রমাণ সাপেক্ষ। সমগ্র ঘটনাটি বিচারাধীন বলিয়া এ বিষয়ে কোন প্রকার মন্তব্যের অবকাশ নাই।”
আমরা মনে করি, ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করার জন্য অভিযুক্তের নিয়মিত আদালতে প্রকাশ্য বিচার হওয়া উচিত এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাঁহাকে পূর্ণ সুযোগ দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারে কয়েক শত রাজনৈতিক বন্দী বৎসরের পর বৎসর ধরিয়া যে দুঃসহ জীবনযাপন করিতেছেন তাহা প্রতিটি দেশবাসীর মনে বেদনার কারণ হইয়া রহিয়াছে। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতা বেলুচিস্তানের প্রিন্স আবদুল করিম, আবদুস সামাদ খান আচক জাই, পূর্ব পাকিস্তানের শ্রী সন্তোষ বানার্জী প্রমুখ প্রায় দশ বৎসর যাবৎ কারাগারে আটক রহিয়াছেন।
ইহাছাড়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন, সহ-সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ দানেশ, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল হালিম, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ, কৃষক সমিতির সহসভাপতি হাতেম আলী খান, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন সভানেত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শফি আহমদসহ প্রায় পাঁচশত কর্মী ও নেতা দেশরক্ষা আইনে বন্দী রহিয়াছেন। রাজবন্দীদের মুক্তির দাবী সারা দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের দাবীতে পরিণত হইলেও রাজবন্দীদের মুক্তিদানের পরিবর্তে নূতন নূতন গ্রেফতার চলিতেছে। সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ নেতা শ্রী মণি সিংহকে গ্রেফতার উহার একটি সাম্প্রতিক নজীর।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু চতুর্থ খণ্ড: ষাটের দশক ॥ তৃতীয় পৰ্ব ॥ ১৯৬৮