পাকিস্তানেও বিক্ষোভ
বালুচিস্তান ও সিন্ধুতে বামঘেঁষা দলগুলো বাংলাদেশের পক্ষে ২৫ মার্চের আগে সভা-সমাবেশ করেছিল, ১৩ মার্চ, বালুচিস্তান ছাত্র সংগঠন কোয়েটাতে বাঙালিদের সমর্থনে মিছিল ও সমাবেশ করে এবং কোয়েটায় হরতাল পালিত হয়।
সিন্ধুর হায়দারাবাদ ন্যাপ (ওয়ালি গ্রুপ) এবং ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ফেডারেশনের প্রায় এক হাজার কর্মী সমর্থক বাঙালিদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে মিছিল করে। সিন্ধুর নওয়াব শাহতেও একই ধরনের মিছিল বের করা হয়।
২১ মার্চ সিন্ধুর আইনজীবীরা একটি কনভেনশন আহ্বান করে বাঙালিদের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সমর্থন জানায়। লাহোর, কোয়েটা, করাচি, হায়দরাবাদ, সুক্কুর প্রভৃতি এলাকায় সিন্ধু প্রভিনসিয়াল কমিটি অব দি কমিউনিস্ট পার্টি উর্দুতে লেখা একটি লিফলেট বিলি করেন। সেখানে লেখা হয়েছিল—
আর্মির কাপুরুষ জেনারেলদের জুন্তা, জনগণের কষ্টার্জিত টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে বাঙালিদের গণহারে হত্যা করছে। এর আগে তাদের বর্বরতা নিষ্ঠুরতার শিকার ছিল বালুচিস্তান। করাচি, হায়দরাবাদ, লাহোর এবং অন্যান্য শহরে এরা শ্রমিক ও যুবকদের ওপর গুলি চালিয়েছে।…
আর্মি জেনারেলরা সাম্রাজ্যবাদী, একচেটিয়া ব্যবসায়ী এবং সামন্ত জমিদারদের সমর্থনে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসেছে। তাঁরা পূর্ববঙ্গ, বালুচিস্তান এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মানুষকে বেয়নেটের মাধ্যমে পদানত করছে যাতে সিন্ধু ও পাঞ্জাবে বেআইনীভাবে দখলকৃত জমি অধিকারে রাখতে পারে। যাতে এসব এলাকায় দারিদ্র, মুদ্রাস্ফীতি, অজ্ঞানতা, বেকারত্ব, খুন লুট এবং গুন্ডামি যাতে অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পায়…
ঢাকা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং পূর্ববঙ্গের অন্যান্য শহরে মেশিনগান দিয়ে নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। দেশের ১৩ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে একটি ফ্রন্ট খোলা হয়েছে…”
সূত্র: নিউ এজ, দিল্লি, ১৮.৪.১৯৭১
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন