কমিউনিস্ট গণমাধ্যমের সমর্থন
পুঁজিবাদী দেশের গণমাধ্যম ১৯৭১ সালে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানিয়েছিলেন বাঙালিদের। যদিও সরকার ছিল বিপক্ষে, বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট সমর্থিত পত্রিকাগুলো সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশকে। এপ্রিলের ২১-২২ তারিখে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র দি মর্নিং স্টার-এ ক্রাইস্ট মিয়ান্টের দীর্ঘ এক লেখা ছাপে। এই লেখায় এই সংগ্রামের পটভূমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। মিয়ান্ট লিখেছেন-“Today it is total war in East Pakistan-or Bangla Desh as its people now call it.” ইয়াহিয়া খান নিরস্ত্র মানুষের ওপর তার সেনাদের লেলিয়ে দিয়েছে।
মিয়ান্ট লিখেছেন, সামরিক শাসনের প্রথম দিন থেকে বামপন্থীরা আওয়ামী লীগ নেতাদের বলে আসছিলেন, ইয়াহিয়া খান পূর্ববঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার মতো কিছু করবে। শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতারা এই সাবধানবাণীকে গুরুত্ব দেয়নি। ইয়াহিয়ার নীতি এখন খুব সরল- যাঁরাই প্রতিরোধ করবে তাদের হত্যা করতে হবে। শিক্ষক, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ বা পেশাজীবী যাদেরই নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদেরই হত্যা করতে হবে।
প্রবন্ধের শেষে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের উচিত হবে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে তাঁরা সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে। ব্রিটিশ জনগণের উচিত হবে বাঙালিদের স্বাধিকার আন্দোলন সমর্থন করা।
নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হতো যুক্তরাষ্ট্র কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ডেইলি ওয়ার্ল্ড। তাঁদের ৩০ এপ্রিল সংখ্যায় পত্রিকার লন্ডনস্থ সংবাদদাতা উইলিয়াম জে পমেরির একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনে সংগ্রামের পটভূমি তুলে ধরা হয়। গুরুত্ব দেওয়া হয় এস কে জানজুয়া, ফরিদ জাফরি, হামজা আলাভী ও তারিক আলীদের বিবৃতির ওপর। সোসালিস্ট হিসেবে তাঁরা বাঙালিদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন।
সূত্র: দি নিউ এজ, দিল্লি, ১৬.৫.১৯৭১
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন