হাউস অব লর্ডসের সদস্যের প্রথম প্রতিবাদ
হাউস অব কমন্সের সদস্য রাসেল জনস্টোন প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন গণহত্যার। হাউস অব লর্ডস বা লর্ডস সভার সদস্য হিসেবে প্রথম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন লর্ড ফেনার ব্রকওয়ে। ব্রিটিশ শাসন থেকে উপনিবেশের মুক্তির আন্দোলনের একজন প্রবক্তা ছিলেন তিনি। ব্রকওয়ে ৪ এপ্রিল এক সভায় বলেছিলেন, তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে বাংলায় এবং সে কারণে তিনি সবসময় নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু মনে করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ইতিহাস বর্ণনা করে তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে স্বৈরাচারীভাবে পূর্ববঙ্গ শাসিত হবে ব্রিটিশরা এটি নিশ্চয় চিন্তা করেনি। শীঘ্রই পূর্ববঙ্গে ভয়ানক ‘হিউম্যান ডিজা স্টার’ বন্ধের দাবি জানান। ৬টি দাবি করেন তিনি—
১. পূর্ববঙ্গে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের জন্য দ্রুত ত্রাণ প্রেরণ।
২. সমস্ত রাজবন্দীদের মুক্তি।
৩. পাকিস্তানি বাহিনির গুলিবর্ষণ বন্ধ ও পূর্ববঙ্গ থেকে তাদের প্রত্যাহার।
৪. জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান যাতে জনগণ তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে।
৫. জাতিসংঘের ত্বরিত হস্তক্ষেপ যাতে পূর্ববঙ্গের ঘটনা আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি না হয়ে দাঁড়ায়।
৬. ১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসে সিঙ্গাপুরে কমনওয়েলথ সম্মেলনে ‘আইডিয়ালস অফ ফ্রিডম’ সম্পর্কিত যে চার্টার সন্নিবেশিত হয়েছিল পাকিস্তান তা লংঘন করেছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে কমনওয়েলথের পুরনো সদস্য ব্রিটেন, কানাডা বা ভারত থেকে পর্যবেক্ষক পাঠানো হোক পরিস্থিতি তদন্ত করার জন্য। নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের জন্য ভারত যে প্রস্তাব করেছে লর্ড ব্রকওয়ে তা সমর্থন করেন।
ঐ একই দিন লেবার পার্টির এম.পি. পিটার শোরও একই দাবি করেন। তিনি বলেন পূর্ববঙ্গের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বাঙালিরা, পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যরা নয়।
সূত্র: বাংলাদেশ ডকুমেন্টস
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন