সন্দেশপুর সংঘর্ষ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ নভেম্বর রবিবার বেলা দেড়টার সময় গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সন্দেশপুর সংঘর্ষে জনৈক মুক্তিযোদ্ধা হাসিমুদ্দিন শত্রুর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বাতাসুর অনুরোধক্রমে হাসিমুদ্দিনসহ তাঁর বাড়ি দেখতে যান। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কারণে রাজাকাররা বাতাসুর বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা বাতাসুর ওই পোড়াবাড়ি থেকে প্রায় ২শ গজ দূরে গাজু মালাকারের বাড়িতে রাজাকার ও পাকবাহিনীর উপস্থিতি ছিল। বাতাসু তাঁর পোড়াবাড়ি দেখে গাজু মালাকারের বাড়ির ছাদে থাকা রাজাকারদের গালি দিয়ে রাইফেলের ফায়ার দেন। এরপর রাজাকার ও হানাদার বাহিনী বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ শুরু করে। তড়িঘড়ি উভয় মুক্তিযোদ্ধা পজিশনে যান। হাসিমুদ্দিন পোড়াবাড়িতে একটি মাটির কুঠির আঁড় হয়ে গুলি ছুঁড়ছিলেন। কিন্তু তাঁর বাম পা কুঠির বাইরে থাকায় হাসিমুদ্দিনের ওই পায়ের উরুতে শত্রুর ছোড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে থেকে যায়। এর ফলে তিনি গুরুতরভাবে জখম হন। বাতার এই খবর দ্রুত সন্দেশপুর ডিফেন্সের বিভিন্ন গ্রুপে পৌঁছে দেন। গ্রুপ কমান্ডার তুরফান খুব দ্রুত ছুটে এসে হাসিমুদ্দিনের চোখে গামছা বেঁধে ঘাড়ে করে তাকে তেলীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম্পে নিয়ে আসেন। মুক্তিবাহিনীর এই ক্যাম্পে লেঃ কাইয়ুম খান অবস্থান করছিলেন। এরপর আহত মুক্তিযোদ্ধা হাসিমুদ্দিনকে দলদলী কম্পানি হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এখানে ৮ নভেম্বর মেডিক্যাল টিম অপারেশন করে তাঁর পা থেকে গুলি অপসারণ করে। ডাঃ মুকুল (রাজশাহী) এখানে চিকিৎসা সেবা দিতেন। অতঃপর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হাসিমুদ্দিনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
[৫৭৪] মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত