সান্তাহারের অভিযান, বগুড়া
বগুড়া শহর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে আনুমানিক ৭০ কিলোমিটার দূরে সান্তাহার অবস্থিত। সান্তাহার শহরটি দখলে রাখবার জন্য পাকবাহিনী শহরস্থিত একটি ওয়ার্কশপে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। ক্যাম্পটিতে বিভিন্ন রকমের রসদ সরবরাহ, জনবল প্রতিস্থাপন ও তথ্য সংগ্রহের জন্য পাকসেনারা প্রায়ই রেলপথে বগুড়া হতে সান্তাহারে যাতায়াত করত। তাই সান্তাহারের আশেপাশে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা ও তাদের ক্ষতি সাধনের জন্য পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী তাদের কয়েকটি ছোট দল একত্রিত হয়। গোয়েন্দা মারফত তারা জানতে পারে যে, ১৯৭১ সালের ১লা ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সদস্যরা রসদ নিয়ে ট্রেনযোগে সান্তাহার যাবে। এমতাবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের আক্রমণের পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা সান্তাহার রেলস্টেশন হতে ৩০০ গজ পূর্বে রেললাইনের মাঝে বিস্ফোরক পেতে রাখে এবং রেললাইনের উত্তর প্রান্তে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ৮.০০ মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেয়। আনুমানিক ১০.০০ সময় সান্তাহারগামী ট্রেনটি তাদের অ্যাম্বুশ এলাকায় প্রবেশ করা মাত্রই মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ফোরণ ঘটায় এর ফলে ট্রেনের সামনের দুটি বগি লাইন থেকে নীচে পড়ে যায়। সামনের বগিতে থাকা পাকসেনারা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। এবং পিছনের বগিতে থাকা তিন জন পাকসেনা পালাতে চেষ্টা করলে মুক্তিবাহিনী তাদের উপর গুলি চালারে তারাও প্রাণ হারায়। অপরদিকে পাকবাহিনীর সাথে গুলিবিনিময়ের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সুজিত গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায়।
[৫৯৭] চাঁদ সুলতানা কাওছার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত