মহেন্দ্রপুর ক্যাম্প আক্রমণ, কুষ্টিয়া
জগন্নাথপুরের রাজাকারদের প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে অক্টোবর মাসের দিকে বাহারুল ইসলাম বাহারের (কুমারপাড়া) নেতৃত্বে আনু বিশ্বাস (চাপাইগাছি), আ. কাদের, আবুল কাসেম, কামাল উদ্দিন, লতিফ সর্দার (মহেন্দ্রপুর), রমজান আলী (চাপাইগাছি)সহ প্রায় ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা মহেন্দ্রপুর রাজাকার ক্যাম্পটি আক্রমণ করেন। বেশ কিছু সময় গুলিবিনিময়ের পর ক্যাম্পে উপস্থিত ২৩ জন রাজাকারের মধ্যে কয়েকজন পালিয়ে যায় আর বকি সবাই আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। এখান থেকে বেশ কিছু অস্ত্র সংগৃহীত হয়। তাছাড়া রাজাকাররা এই ইউনিয়নে আর ক্যাম্প করতে সাহস করেনি। রমজান মাসে এ.টি.এম. আবুল মনসুর মজনু নামের এক কিশোরের সাহায্যে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে অফিসার্স ক্লাবের আর্মি ক্যাম্পে অসম সাহসিকতার সাথে হ্যান্ড গ্রেনেড দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালান। এছাড়া শহরের বিভিন্ন দেয়ালে জল্লাদ ইয়াহিয়া খানের কার্টুন সংবলিত পোস্টার লাগিয়ে দেয়া হয়। এসব তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করতে সক্ষম হয় এবং যেকোনো সময় তারা হামলার আশঙ্কা করতে থাকে। অক্টোবর মাসের দিকে একদল ছাত্র ঢাকা থেকে পালিয়ে ফরিদপুর ও সেখান থেকে কুষ্টিয়া আসে। তারা ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে কুমারখালীতে এসে কুষ্টিয়া সীমান্তের সন্ধান জানতে চায়। শামসুদ্দিন মাস্টার তাদেরকে সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বিশ্বাসঘাতকতা করে কাসিমপুরে গড়াই ব্রিজের কাছে মিলিশিয়া ক্যাম্পে নিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়। মিলিশিয়ারা তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে দেয়।
[১২] এ. টি. এম. যায়েদ হোসেন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত