রামনগরের যুদ্ধ, মেহেরপুর
গাংনী রামনগরেরে যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি কিছুতেই মুছতে পারছিল না বামুন্দী ক্যাম্পের পাকসেনারা। গোয়ালগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের শেল্টার সম্পর্কে ষ্পষ্ট ধারণা নেয়ার পর ৬ সেপ্টেম্বর এক কোম্পানি পাকসেনা রাত তিনটের সময় অতর্কিত আক্রমণ করে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা ছিল যথেষ্ট সতর্ক। এলএমজি ছিল আব্দুল মোমিন ও ওয়াজেদ আলীর কাছে। এক বারের ব্রাশ ফায়ারেই ১০/১২ জন পাকসেনাদের খতম করে দেয়। কিন্তু বিপর্যয় ঘটলো এলএমজির ম্যাগাজিন বদল হয়ে যাওয়ায়। রাশিয়ান এবং ব্রিটিশ এলএমজির ম্যাগাজিন পৃথক। এই ম্যাগাজিন পারস্পরিক রদবদল হয়ে যাওয়ায় দুই এলএমজিম্যান নিষ্কিয় হয়ে পড়ে এবং শত্রুর গুলিতে লুটিয়ে পড়ে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পেরে নায়েক আব্দুল লতিফ মোল্লা উর্দুতে কমান্ড দিয়ে পাকবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে কয়েক মিনিটের জন্য গুলিবর্ষণ থামিয়ে রাখেন। সেই সুযোগে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা সরে যায়। তিনি নিজেও আহত সহযোদ্ধা নওশাদকে কাঁধে নিয়ে পিছু হটে যান। আরো তিন আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ, হাতেম, এবং করিমকে টেনেহিঁচড়ে নিরাপদে সরিয়ে নেন সানাউল্লাহ। এরপর পাকসেনারা ঐ উর্দু কমাণ্ডের চাতুর্য বুঝতে পেরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দাতা পরিবারের ১৫ জন সদস্যকে নির্মম্ভাবে হত্যা করে।
[১০৩] রফিকুর রশীদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত