রাউজানের লাম্বুরহাট এলাকায় অভিযান, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের রাউজান থানার লাম্বুরহাট এলাকায় রাজাকারদের অত্যাচার বন্ধ করতে ও তাদের অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করতে মুক্তিযোদ্ধারা এই অভিযান পরিচালনা করেন। পর্যবেক্ষণের পর ৪০/৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে লাম্বুরহাটের দিকে যাত্রা করেন। রাত ৭টার পর নৌকাযোগে তাদের যাত্রা শুরু হয়। পরের দিন ক্যাপ্টেন করিমকে গ্রাম থেকে হাবিলদার নরুন্নবী, আজিজুল হক, সামসুল আলম ও পিসি গোলাম ফারুককে লাম্বুরহাটে তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। তিনি উক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে পুনরায় যাত্রা শুরু করেন। পথিমধ্যে তাঁরা ২ জন রাজাকারকে পান ও আক্রমণ করে ১ জনকে ধরে ফেলেন। তাঁকে প্রহার করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ক্যাপ্টেন করিম ও শামসুল মুক্তিযোদ্ধাদেরকে একটি মিল ঘরে রেখে, এলাকায় টহলরত রাজাকার আছে কিনা খবর নিতে যান। দেখেন যে ১০/১২ জন রাজাকার জুয়া খেলছে। ক্যাপ্টেন ও সামসুল দ্রুত রিভলবার বের করে গুলি করেন, সাথে সাথে ৫ জন রাজাকার মারা যায়। অন্যদিকে মিল ঘরে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা গুলির শব্দ শুনে বেরিয়ে আসে। এসময় অন্য রাজাকাররা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অতঃপর লাম্বুরহাট ব্রিজের দিকে যাত্রা করেন। রাত আনুমানিক ১১টা নাগাদ পৌঁছে তাঁরা দেখতে পান যে ৮/১০ জন রাজকার টহল দিচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজাকাররা আগমন টের পেয়ে যায়, ফলে তাঁরা কোনো রকম বাধা না দিয়ে নদীতে অস্ত্র ফেলে দৌড় দেয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা ২ ভাগ হয়ে অন্য অপারেশনে যান। ১ ভাগ করিম ও আজিজুলের নেতৃত্ব পাকসহযোগী এক দালালের বাড়িতে, অন্যদল পাক সমর্থক এক চেয়ারম্যানের বাড়িতে আক্রমণের জন্য যান। ক্যাপ্টেন করিম গিয়ে দালালের বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে দালালকে হত্যা করেন। অন্য গ্রুপ চেয়ারম্যানকে না পেয়ে তাঁর ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। মুক্তিযোদ্ধারা একদিন ওখানে থেকে পরেরদিন বোয়ালখালী আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরে আসেন।
[৫৯৭] কে.এম. আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত