মুশরীভূজা সম্মুখ সমর-১, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মুক্তিবাহিনীর হেডকোয়ার্টার ভোলারহাট থানা ভবন থেকে টহল তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এমনিভাবে ১৪ জুলাই ১৯৭১ (৩০ আষাঢ়) বুধবার টহল দলের আগে দু’জন রেকি পাঠানো হয় শত্রুর গতিপ্রকৃত আবগত হবার জন্য। রেকিতে ছিলেন, বাহাদূরগঞ্জ ফ্রামের শহীদ অ মনোয়ার হোসেন মনা। শহীদ তিলের খাজা বিক্রেতা ফেরিওয়াল্র ছদ্মবেশ এবং মনোয়ার ডিম্বিক্রেতা (ফেরি করে) ছদ্মবেশ রেকিতে যান। এরপর ১৮জন বীরযোদ্ধা টহল বের হন। লড়াকু টহল দলের কমান্ডার ছিলেন সৈয়দ আ. রাজ্জাক রাজা মিয়া এবং গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন ফলতান। এই টহলদলে কমান্ডার রাজা মিয়ার কাছে ছিল বৃটিশ এলএমজি, ফলতানের কাছে রাইফেল, হাড্ডার কাছে টু-ইঞ্চ মর্টার এবং সবার কাছে ছিল ৩০৩। রেকিদল হান্দার বাহিনী অ তাদের দোসর শান্তিকমিটির সদস্য ও রাজাকারদের গতিপ্রকৃত পর্যবেক্ষণ করে ফিরে এসে ময়ামারী মোড়ে ঈদগাহ ময়দানের কাছে মুক্তিবাহিনীর লড়াকু টহল দল্র কাছে রিপোর্ট করে। তাঁরা মুক্তিবাহিনীকে জানালেন, বারাইপাড়া গ্রামের কাছে একপাল গরুর পেছনে ১০/১২ জন সিভিল পোষাকধরী ব্যক্তি ও তাদের পেছনে পাকফৌজ আসছে। রেকিদলের কাছ থেকে ওই গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত সামনে অগ্রসর হন এবং মুশরীভূজ ব্রিজের নিচে অবস্থান নেয় ফলতান ও জয়নাল। অন্যরা ছিলেন ভোলাহাট-রহনপুর মূল সড়কের ব্রীজসহ উত্তর-পশ্চিমে ক্যানেল উঠবে তখন ফায়ার ওপেন করা হবে। কিন্ত পাকফৌজ অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করার দারুন উভয় পক্ষের তুমুল গুলি বিনিময় হয়। এই সম্মুখ সমর সকাল সাড়ে ১০:০০ টায় শুরু হয়ে বিকেল স্রে ৪:০০ টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর রসদ ফুরিয়ে যাওয়ায় তাঁরা পিছু হটে আসে। অপরদিকে পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর কাছে কঠোর প্রতিরোধের মুখে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পেছনে ফিরে যায়।
[৫৭৪] মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত