মুখন্দসার যুদ্ধ, চাঁদপুর
চাঁদপুরের মুখন্দসার যুদ্ধের বর্ণনা পেয়েছি মুক্তিযোদ্ধা মুজিবের কাছ থেকে। আমার গ্রুপের আর একটি লড়াইয়ের কথা বলতে হয়। স্থানটির নাম মুখন্দসার রাজারগাঁও। দিনটি ছিল ১০ই ডিসেম্বর। ৮ই ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ থেকে পাকবাহিনী চলে যায় যার ফলশ্রুতিতে হাজিগঞ্জ মুক্ত হয়। পাকবাহিনী হাজীগঞ্জ থেকে পালাবার সময় পথ ভুলে মুখন্দসার গ্রামে চলে আসে। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের খবর দেয়। এই অবস্থায় আমারা তাদের ঘিরে ফেলি। সেখানে আমাদের সাথে পাকবাহিনীর তুমুল লড়াই হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আবু তাহের পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। আবু তাহেরের করুণ মৃত্যু আমি নিজে দেখেছি। সে আমার পাশেই ছিল দেশ ও জনতার প্রতি গভীর ভালবাসা, যে ভালবাসা সে আমার পাশেই ছিল। দেশ ও জনতার প্রতি গভীর ভালবাসা, যে ভালবাসা কখনও বেঁধে রাখা যায় না, যে ভালবাসা মানুষকে উন্মাদ করে। তাই পজিশন ছেড়ে যেই আবু তাহের পাকবাহিনীকে খতম করতে এগিয়ে যায়। ঠিক এই মুহূর্তে পাকবাহিনী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ১০ই ডিসেম্বর ফকিরহাট, ২নং রাজারগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন, হাজীগঞ্জ, আমার বাহিনী পাকবাহিনীকে ঘেরাও করে। এখানে পাকবাহিনীর সাথে আমার গ্রুপের তুমুল লড়াই হয়। আমার বাহিনীর পাশাপাশি ফকিরহাটে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারাও ছিল। এই যুদ্ধে জয়নাল-১ (রাজাসার), জয়নাল-২ (শ্রীপুর) ও একজন বিএলএফ সদস্য (নাম মনে নেই) মারা যায়। বিএলএফ সদস্য ছাড়া বাকিদের নাসিরকোর্ট দাফন করা হয়। এখানে সুভাষ নামে আর একজনকে আনতে হয়। এই শহীদদের স্মৃতি আজও নাসিরকোর্টে আছে
[৫০] ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত