You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.12 | ফতুল্লা নলখালি রেলসেতু অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

ফতুল্লা নলখালি রেলসেতু অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ

১২ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৫টায় গ্রুপ কমান্ডার আলী হোসেনের বাড়িতে এক বৈঠক হয়। এতে গ্রুপ কমান্ডার খোরশেদ আলম, মো. ইসমাইল, এহসান কবীর রঞ্জন, আব্দুল মতিন, মফিজউদ্দীন, আয়েত আলী গাজী, আ. হামিদ মোল্লা, মহিউদ্দিন মোল্লা, কামাল হোসেন, ফজলুল হক, জয়নাল আবেদিন, মহিউদ্দিন আহমদ, আক্কাছ আলী, কলিমউদ্দিন মুন্সি, আবদুল মালেক, হজরত আলী, খালেক, সিদ্দিকুর রহমান, ওহাব আলূ, বদিউল আলমসহ আরো কয়েকজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। জালকুড়ি গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ২/৩ বার৪ লোক অয়াঠিয়ে ফতুল্লা রেলসেতুর পজিশন দেখে নলখালি রেলসেতু অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রুপ কমান্ডার আলী হোসেন ও গ্রুপ কমান্ডার খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে অন্য মুক্তিযোদ্ধারা জালকুড়ি গ্রাম হতে লামাপাড়া গিয়ে পশ্চিমে রেললাইনের পূর্ব ঢাল ধরে সোজা দক্ষিণে এবং রেল ক্রসিংয়ের ৬০/৭০ গজ দূরে অবস্থান নেন। ১২০০ পাউন্ড এক্সপ্লোসিভ দিয়ে ৫টা চারজার তৈরি করে প্রেমকড দিয়ে যথাযথভাবে চারজার বানিয়ে নেয়া হয়। মফিউজউদ্দিন, মহিউদ্দিন, ফজলুল হক, আক্কাছ আলী, ওহাব আলী, খালেক, সিদ্দিকুর রহমান, মহিউদ্দিন, কলিমউদ্দিন মুন্সি, আব্দুল মালেক, হামিদ মোল্লা, হযরত আলী, এহসান কবীর রঞ্জন, কামাল হোসেন, আ. মতিন ও বদিউল আলম হঠাৎ আক্রমণ করে রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করান। অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা বিস্ফোরকের চরজারগুলো নিয়ে ক্ষিপ্তগতিতে সেতুর চার কোনায় চারটা এবং মাঝের পিলারে একটা বসান। প্রেমকডের পাঁচ মাথা একত্র করে ডেটোনেটর সঠিক বিন্দুতে ঢোকায় এবং পঁয়তাল্লিশ সেকেন্ডের মধ্যে আইলপাড়া রাস্তা ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ব দিকে অগ্রসর হবার নির্দেশ দেয়া হয়। রাজাকাররা অন্য পথ দিয়ে ঘুরে পাকসেনাদের ক্যাম্পে খবর দিলে পাকবাহিনীর একদল সৈন্য দৌড়ে সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরতে আসামাত্র এটি বাস্ট হয়ে যায়। ৬ জন পাকসেনা সাথে সাথে মারা যায়। ওই সময় অপর দিকে পাকসেনাদের প্রহরায় নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি মালবাহী ট্রেন ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে সেতুতে এসে বিস্ফোরণের কবলে পড়ে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়। এই অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ ও হামিদ মোল্লা আহত হন। এবং ২২ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। এটি বি বি সি-তে প্রচার হয়।
[১১০] রীতা ভৌমিক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত