পাঁচড়া যুদ্ধ, কুমিল্লা
কুমিল্লার রাজাপুর রেলওয়ে ষ্টেশনের কাছে পাঁচড়া গ্রামে পাকবাহিনীর একটি অবস্থান ছিল। এ অবস্থানটি শক্রদের নয়নপুর এবং রাজপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে পিছন থেকে সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হতো। মতিন নগর থেকে একটি রাইডিং পার্টি পাঁচড়া গ্রামে শক্র অবস্থানের উপর অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ চালানোর জন্য আসে। ১৩ জুন রাত নয়টায় এদলটি গ্রামের গোপন পথে শক্র অবস্থানের ভিতর অনুপ্রবেশ করে এবং অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এ অতর্কিত আক্রমণে শক্রদের মধ্যে সম্পূর্ণ বিশৃংখলা দেখা দেয়। রেইডিং দলটি বেশ কিছু সৈন্য হতাহত করে শক্র অবস্থান থেকে সরে পড়ে। কিন্তু এর পর শক্রদের সাথে রাতের অন্ধকারে প্রায় ২ ঘন্টা গোলাগুলি চলতে থাকে। অন্যদিকে ঐ সময়ে, পাকসেনাদের ঊর্ধ্বতন হেডকোয়ার্টারে প্রেরণ করা পাকদের ওয়ারলেস ম্যাসেজ ধরা পরে মতিননগরে মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারলেসে। ওয়ারলেসে মুক্তিযোদ্ধারা শুনতে পায়। “মুক্তি বাহিনী আমাদের উপর ভয়ংকর আক্রমণ চালাচ্ছে। আমাদের নির্দেশ দিন আমরা এখন কি করব”? এ ছারাও ওয়ারলেসে শক্র অবস্থান থেকে বার বার “পাকিস্তান জিন্দাবাদ”“১৭তম পাঞ্জাব জিন্দবাদ” শ্লোগান এবং গোলাগুলির প্রচণ্ড আওয়াজ শুনতে পায়। মতিনগরের মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারেন যে রেইডিং দলটি শক্র অবস্থান থেকে সরে আসার পরও পাকবাহিনী নিজেদের মধ্যে কয়েক ঘন্টা গোলাগুলি করে বীরত্বের পরিচয় দিচ্ছে। এ যুদ্ধে পাকদের ১১ জন নিহত ১২ জন আহত হয়। বেশ কিছু সংখ্যক সৈন্য পাকদের নিজেদের গুলিতেই হতাহত হয়।
[১৮] আবুল কাশেম হৃদয়
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত