ধরমপাশা আক্রমণ, সুনামগঞ্জ
ধরমপাশা থানা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য থানার চারপাশে বাংকার ও ট্রেঞ্চ খুঁড়ে মুজাহিদ ও রাজাকার বাহিনী সার্বক্ষণিক পাহারায় নিয়োজিত ছিল। এই সময় ছাতক ও সুনামগঞ্জ থেকে সুরমা নদীতে পাকিস্তানী গানবোট টহল দিত। স্থানীয় অবস্থা এবং মুজাহিদ ও রাজাকার বাহিনীর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে ৯ অক্টোবর ১৯৭১ সন্ধ্যার পর ক্যাপ্টেন মতিউর ধরমপাশা থানার উপর আক্রমণ পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে তিনি দুটি কোম্পানিকে তিনভাগে বিভক্ত করে তিন দিক থেকে আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। তিনটি কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন যথাক্রমে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান, সুবেদার মুসলেহ উদ্দিন ও বাংলাদেশ রাইফেলস-এর নায়েক আবদুর রহমান। ওয়্যারলেসের মাধ্যমে তিনটি গ্রুপের সাথে সংযোগ রক্ষা করা হয়। সন্ধ্যার পরপরই রাজাকার ও মুজাহিদ সৈন্যরা ট্রেঞ্চে অবস্থান গ্রহণের পূর্বেই তিনদিকের আক্রমণে তারা সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। মর্টারের গোলা সরাসরি থানার উপর গিয়ে পড়ে। বড় ধরনের বিপর্যয়ের ভয়ে রাজাকার ও মুজাহিদ সৈন্যরা রাতের অন্ধকারে পেছন দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিবাহিনী থানা দখলের পর বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকজন শক্র সৈন্যের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই সময় বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন শাহাদাতবরণ করেন।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত