৮ এপ্রিল ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ – রংপুর
৭ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী সাঁজোয়া বহর নিয়ে লালমনিরহাট এবং রংপুর থেকে কুড়িগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। অনেকটা বিনা প্রতিরোধেই বিকালে পাকিস্তানি বাহিনী কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশ করে। তারা বর্তমান সার্কিট হাউজের সামনে এসে পজিশন নিয়ে তৎকালীন কুড়িগ্রাম উপ-কারাগারে অতর্কিতভাবে হানা দেয়। সেসময় উপ-কারাগারে কর্তব্যরত এক নন বেঙ্গলি জমাদারের সহায়তায় উপকারাগারের ইনচার্জ শেখ হেদায়েত উল্লাহ ও পাঁচজন কারারক্ষীকে পাকিস্তানি বাহিনী ডেকে নেয় এবং বর্তমান সার্কিট হাউসের সামনের রাস্তার পূর্ব প্রান্তে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। শহীদ হন কারারক্ষী লাল মোহাম্মদ, আনসার আলী, সাজ্জাদ হোসেন এবং জহির উদ্দিন। ৮ এপ্রিল কুড়িগ্রামে ক্যাপ্টেন নওয়াজেশের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সম্মেলন হয়। সম্মেলনে কুড়িগ্রাম, রৌমারী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গমারী এলাকা যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এই এলাকাকে রংপুর সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। রংপুর সেক্টরকে পাটগ্রাম এবং ভুরুঙ্গমারী এই দুটি সাব- সেক্টরে ভাগ করা হয়। পাটগ্রাম সাব- সেক্টরের দায়িত্ব সুবেদার বোরহানউদ্দিনকে এবং ভুরুঙ্গমারী সাব সেক্টরের দায়িত্ব সুবেদার আরব আলীকে দেয়া হয়। রংপুর সেক্টরের দায়িত্বে থাকেন ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ উদ্দিন। রাত ১টায় সুবেদার বোরহানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি কোম্পানি লালমণিরহাট থানা হেড কোয়ার্টারে অবস্থারত পাকসেনাদের উপর অতর্কিতে আক্রমন চালায়।