টেংরাটিলা আক্রমণ, সুনামগঞ্জ
১৪ আগস্ট রাতে [সুনামগঞ্জের] টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড শক্রুমুক্ত করার জন্যে আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করে মুক্তিবাহিনী। এ যুদ্ধে শহীদ কোম্পানি, সাধন ভদ্রের কোম্পানি ও ইউছুফ আলীর প্লাটুন অংশগ্রহণ করে। এ যুদ্ধ পরিচালনা করেন সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন হেলাল এবং তত্ত্বাবধান করেন সেক্টর কমান্ডার কমান্ডার মেজর মীর শওকত আলী নিজে। টেংরাটিলার পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর এ তিন দিক দিয়েই মুক্তিবাহিনী ছিল। দক্ষিণ দিকে ছিল হানাদার বাহিনীর সরবরাহ লাইন। পশ্চিম দিকের সর্বশেষ ডিফেন্স থেকে হাওরের তীর ঘেঁষে তাদের ডিফেন্সের কাছে গিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিন দিক থেকে আক্রমণ শুরু হলে দক্ষিণ দিকের আক্রমণ চলবে এবং চতুর্দিকের আক্রমণে শক্রু সৈন্য আত্মসমর্পণ করবে এ রকম ছিল ধারণা। কিন্তু পরিকল্পনা মত কাজ হলো না। বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শক্রুমিত্র গুলিয়ে ফেলে দ্বিধায় পড়ে যায়। পশ্চিম দিক থেকে যে দলটি অগ্রসর হবার কথা ছিল তারা নিজেদের দল ও শক্রুপক্ষের ক্রস ফায়ারিং এর মধ্যে পড়ে আর অগ্রসর হতে পারল না। পরে আবার ক্যাপ্টেন হেলালের নেতৃত্বে টেংরা অগ্রবর্তী পাক সেনার ডিফেন্স আক্রমণ করা হয়। এ আক্রমণে মঈনউদ্দিনসহ সাঁট জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। অপারেশন কমান্ডার ক্যাপ্টেন হেলাল নিজেও শক্রু সেনাদের ঘেরাও-এর মধ্যে পড়ে যান। কোনো রকমে ধানের ক্ষেতে হামাগুড়ি দিয়ে পিছিয়ে আসতে সক্ষম হন। শহিদ কোম্পানীর এলাকায় অক্টোবরের শেষ দিকে লেঃ এম, এ, রউফ ও লেফটেন্যান্ট খালেদ এসে যোগ দেন। তাঁরা বাংলা বাজারে আসার পর এ যুদ্ধ পরিচালনার জন্যে তিনটি ভাগ করা হয়। লেঃ রউফকে দেয়া হয় পাইওনিয়ার কোম্পানীর দায়িত্ব, লেঃ খালেদকে দেয়া হয় দাদা কোম্পানি এবংত শহীদ চৌধুরীর উপর ফক্সট্রট কোম্পানির দায়িত্ব। দেশের অভ্যন্তরে মুক্তিবাহিনীর ততপরতা বৃদ্ধির পর শক্রু সৌন্যরা টেংরা থেকে ২৭/২৮ তারিখে পিছু হটে যেতে বাধ্য হয়।
[৭৬] মোঃ আলী ইউনুছ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত