জিনারদী ক্যাম্প আক্রমণ, নরসিংদী
১২ আগস্ট পাকবাহিনীর জিনারদী ক্যাম্প আক্রমণ করা হয়। এ এক দুঃসাহসী আক্রমণ। মূল দলকে দূরে অ্যাম্বুশে রেখে ন্যাভাল সিরাজ মাত্র দুজন নির্ভীক সহযোদ্ধাকে নিয়ে অতর্কিতে এই ক্যাম্পটিতে সমুস্থিত হয়ে অতি নিকট থেকে ঝটিকা আক্রমণ করে এদের সকলকে আত্মসমর্পণ করান। ১৬ জনকে অস্ত্র সমর্পণ করানোর দায়িত্ব পালন করেন মাত্র দুজন মুক্তিযোদ্ধা। অস্ত্র সমর্পণের পর খানসেনাদের একজন পালাতে গিয়ে নিহত হয়। এই যুদ্ধে ১টি এলএমজি, ১টি এসএমজি ও ১১টি রাইফেল ছাড়াও মেশিনগানের ৪৫০০ রাউন্ড গুলি, ৮০০ রাউন্ড স্টেনগানের গুলি, ১৪টি বেল্ট, ২৮ জোড়া জুতা, ১৭ ব্যাগ আটা, ১১ পেটি দুধের টিনসহ প্রচুর ব্যবহার্য জিনিস মুক্তিবাহিনীর হস্তগত হয়। মুক্তিবাহিনী পরে জিনারদী রেলস্টেশনটি বিধ্বস্ত করে এবং স্টেশনের টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে দিন ১৩ আগস্ট নরসিংদী থেকে পাকসেনারা জিনারদী অভিমুখে এসে পার্শ্ববর্তী গ্রামে লুটপাট আরম্ভ করে। মুক্তিবাহিনী তাদের সেখানে আক্রমণ করে। তিনঘন্টাব্যাপী তুমুল যুদ্ধ চলে উভয়পক্ষে। পরিশেষে দুজন নিহত ও কয়েকজন আহত সেনাকে সঙ্গে নিয়ে পাকবাহিনী নরশিংদীতে পালিয়ে যায়। এদকে দুর্ভাগ্যক্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষের শিবপুরের ইব্রাহিম শহীদ হন। এই দুটি যুদ্ধের বিষয় স্বাধীন বাংলা বেতারসহ সকল প্রচারমাধ্যমে প্রচারিত হয়। আর লোকের মুখে মুখে ন্যাভাল সিরাজসহ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথা উচ্চারিত হয়ে থাকে।
[১২৭] সিরাজ উদ্দীন সাথী
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত