জুড়ি চা বাগান ও ঝিঙ্গালা চা বাগান যুদ্ধ, বড়লেখা, সিলেট
বড়লেখা থানার জুড়ি চা বাগান ভারত সীমান্তের কাছাকাছি। এখানে পাকসেনাদের শক্ত অবস্থান ছিল। জুড়িবাজার ইতোমধ্যে শতাধিক লোক মেরেছে পাক হানাদাররা সূর্য সন্তান তৈমুছ আলীর সহযোপযোগী ও সঠিক নেতৃত্বে এম এ মুমি আশুক বহু অপারেশনে অংশ নিয়ে সফলতা পেয়েছে। একটি অপারেশনে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অবশেষে ২০ আগস্ট ভারতের রাঘনা থেকে এম এ জলিল মাশুক, এম এ মুমিত আশুক, দেবাশিষ মজুমদার টিপুসহ আজমলা আলী, গৌরাঙ্গ দেব ও সঙ্গীদের নিয়ে সামরিক ট্রাকে ১০ মেইল এসে বাকি পথ পায়ে হেঁটে জুড়ি চা বাগানে উপস্থিত হন। পরিকল্পনা মাফিক অপারেশনে চালাতে হয়। সমস্ত বাগান জুড়ে যুদ্ধের তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়ে। রাতের নিরবতা খান খান হয়ে ভেঙ্গে পড়ে গোলাগুলির শব্দে দীর্ঘ সময় গুলি চলে পরে পাক আর্মি পিছু হটে। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ২০ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
নভেম্বর ৬০ জন এফ.এফ. এবং ২০ জন জে এল ডব্লিউর একটী দলের সাথে রাঘনা দিয়ে দেশে প্রবেশ করে গজুকাটা গ্রামের এক দেশপ্রেমিক। কোমরে বেয়নেট, পকেটে গ্রেনেড, পিঠে গোলাবারুদ আর প্রচারপত্রে বোঝা। মুক্তাঞ্চল গঠনের জন্য হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করার জন্য এলাকার লোকজনের মাঝে চরমপত্র বণ্টনের দায়িত্ব নিয়েই মুক্তিযোদ্ধা অগ্রসর হয়। গ্রুপটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ জলিল মাশুক, এম, এ. মুমিত আশুক, মুকুল দে, আবুল কালাম, কুলেশ চন্দ্র, আব্দুল সাত্তার ও অরুন দে প্রমুখ ছিলেন। বিকেল ৪টায় ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে হাঁটতে হাঁটতে পরের দিন সকালে পৌঁছেন ঝিঙ্গালা বাগানে। এর মধ্যে পাক আর্মিরা সেখান থেকে অনেক পেছনে চলে গেছে, কিন্তু রয়ে গেছে তাদের দোসর রাজাকাররা। অত্যাচারও তারা চালাচ্ছে পাক বর্বরদের সমান তালে। ফলে মুক্তিবাহিনীর আগমনে উৎফুল্ল হন সেখানের লোকজন। স্থানটির ঘেরাও করে ২ জন রাজাকার গ্রেফতার করা হয়ে এবং ১টি রাইফেল মুক্তিবাহিনী পেয়ে যায়।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত