জমিদারহাট অপারেশন-১, নোয়াখালী
জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে নোয়াখালীর জমিদারহাট অপারেশন হয়। জানা যায় জে, জমিদার হাটে রাজাকার ক্যাম্পে বেশ কিছু রাজাকার আছে। তাদের খতম করা, সেখান থেকে রাজাকার ক্যাম্প সরিয়ে নেয়া এবং তাদের চাপে রাখার জন্য এই অপারেশনের সিধান্ত নেয়া হয়। রাজাকারারা এখানে আছে এবং রাতে এখানে অবস্থান করবে এই খবরটি নিয়ে আসেন লক্ষীপুরের নূরে আলম। অপারেশনের আগেরদিন মুন্সিরহাটের পূর্ব দিকে নুড়ুল হক দারোগার বাড়িতে পরিকল্পনা নেয়া হয়ে অপারেশনের। সিধান্ত মোতাবেক জাহেদ, রফক, সায়েদুল হক, চুন্নু, নূরন্নবী, ফরিদ, মোস্তফা, নূরন্নবী, আব্দুল, প্রমুখ সুবেদার শামছুল হকের নেতৃত্বে নুরুল হক দারোগার বাড়ি থেকে মুন্সীর হাতের পূর্ব দিকে জমিদারহাট রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে। ছায়েদুল হক প্রথমে গুলি করেন। রাজাকারদের সংখ্যা ছিল ৩০/৪০ জনের মতো। ১৫/২০ জনের মতো এল.এমি.জি ও স্টেনগান ছিল। এই অপারেশন প্রায় দেড়্গহন্টা স্থায়ী হয়। রাজাকারদের মধ্যে ২০/৫০ জন মারা যায়। তাদের কাছে ছিল থ্রি নট থ্রি রাইফেল। তারা অস্ত্র চালানোর ট্রেনিং ভালোভাবে জানত না। এই খবর পৌঁছে যার অন্যান্য ক্যাম্পের রাজাকারদের কাছে। তারা ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। কিছুদিন পর সেই অপারেশনে থাকা গোলাম মোস্তফা, জমিদার হাট থেকে পশ্চিমে একটি দোকানের পার্শ্ব দাঁড়ানোর অবস্থায় রাজাকাররা তাকে ঘিরে ফেলে। প্রথমে তাঁকে অনেক গালি গালাজ করে। সেকান্দার নামের একজন রাজাকার হাট, পা বেঁধে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। ওখান থেকে ছানাউল্লাহ চৌধুরী নামক রাজাকারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নিল কালী বাবুর গ্যারেজ। ওখানে গিয়ে সুলতান নূরন্নবীসহ আরও কয়েকজন হিন্দু লোককে দেখতে পেলেন গোলাম মোস্তফা। আরও দেখলেন নতুন বউকে উঠিয়ে নিয়ে আসছে রাজাকাররা, রাজাকার মুনিরের নির্দেশে। সেখানে আমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছিল মোস্তফার উপর। অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিল রাজাকার মুনির আহমেদ তাঁকে। একবার গুলির অর্ডার দিয়েছিল। আমানুষিক অত্তাচারে তাঁর পা অকেজো হয়ে যায়।
[৪৪] জোবাইদা নাসরীন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত