You dont have javascript enabled! Please enable it! চট্টগ্রাম রেলওয়ে ব্রিজ ধ্বংস এবং আর্মি ট্রেন উড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা - সংগ্রামের নোটবুক

চট্টগ্রাম রেলওয়ে ব্রিজ ধ্বংস এবং আর্মি ট্রেন উড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ধলঘাট-কৃষ্টখালী রেলওয়ে ব্রিজ অবস্থিত। চট্টগ্রাম-দোহাজারির মধ্যে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ও পাকসেনা-রাজাকারদের অত্যাচার ও অপতৎপরতা রুখতে মুক্তিযোদ্ধারা এ রেলওয়ে ব্রিজ অপারেশন চালায়। এ অপারেশনের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সোলায়মান তিনজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ওই ব্রিজ ধ্বংস করার যাবতীয় পরিকল্পনা করেন। এরপর চারজনের ওই ক্ষুদ্র মুক্তিযোদ্ধা দল সন্ধ্যা সাতটার দিকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বোয়ালখালী জ্যেষ্ঠপুর গ্রাম থেকে কমান্ডার সোলায়মানের নেতৃত্বে অপারেশন স্থানের দিকে যাত্রা শুরু করেন। প্রায় ঘন্টাখানেক পর তাঁরা ব্রিজের ১০/১৫ গজ দূরে এসে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চুপিসারে ক্রলিং করে ব্রিজের দুমাথায় অবস্থান নেন। এ সময় সংকেত মতো অন্ধকারের মধ্যেই ব্রিজের ওপর দুটি গ্রুপ একসাথে পাহারারত রাজাকারদের ওপর গুলি চালাতে থাকে। আকস্মিক গুলি বর্ষণে সশস্ত্র রাজাকার দল কোনো প্রকার প্রতিরোধ না করেই ব্রিজ থেকে লাফিয়ে নিচ পড়ে ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যায়। অতঃপর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিজের গোড়ায় বিস্ফোরক লাগিতে তাতে অগ্নিসংযোগ করে ব্রিজটি উড়িয়ে দেন। সফল অপারেশন শেষে তাঁরা রেললাইন ধরে উত্তর দিকে পাঁচশ গজের মতো এগিয়ে একটি এন্টিমাইন পুঁতে রাখেন। পরদিন সকালে চট্টগ্রা-দোহজারি লাইন দিয়ে একটি ট্রেন ওঁই স্থানে এলে মাইনটি বিস্ফোরিত হয় এবং ট্রেনিটি ৪/৫ বগিসহ উল্টে পড়ে যায়। এ সময়য় বেশখানিক রেল লাইনও উপড়ে গিয়েছিল। এ অপারেশনে একটি এন্টি ট্যাংক মাইন, পিকে-২ বিস্ফোরক, ২টি স্টেনগান ও ২টি রাইফেল ব্যবহার করা হয়। এ অপারেশনে রেলব্রিজটি ধ্বংস হয়ে যায়; ফলে কিছুদিন রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
[৫৯৭] কে.এম.আহসান কবীর

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত