ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ আক্রমণ, নরসিংদী
নরসিংদীর পলাশ থানার শিল্প অঞ্চল ঘোড়াশালে একটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ছিল। এই এক্সচেঞ্জটির ৫০০ মিটার উত্তরে অবস্থিত ঘোড়াশাল রেলস্টেশনে পাকসেনাদের একটি ক্যাম্প ছিল। আবার টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির দক্ষিণ পাশে অবস্থিত তদানীস্তন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ জুট মিলেও পাকসেনারা অবস্থান করতো। ঘোড়াশাল অবস্থানরত পাকসেনারা অন্যান্য স্থানে অবস্থানরত পাকসেনাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য এই টেলিফোণ এক্সচেঞ্জটি ব্যবহার করতো। তাই টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির গুরুত্ব অনুধাবন করে নরসিংদী মুক্তিযোদ্ধা ন্যাভাল সিরাজ টেলফোন এক্সচেঞ্জটি এক্সপ্লোসিভ দিয়ে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর রাত ৯টায় মুক্তিযোদ্ধা আজাদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের কাছে পৌঁছায়। মুক্তিযোদ্ধা আজাদ নিজেই এক্সচেঞ্জের চারদিকে এক্সপ্লোসিভ লাগিয়ে বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটান। ফলে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ধ্বংস হয় যায়। সে সময় এক্সচেঞ্জেটিতে কোন প্রহরী ছিল কিনা বা পাকসেনাদের পক্ষ থেকে কোন প্রতিরোধ করা হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি। তবে ঘোড়াশাল রেলস্টেশনের সেনাক্যাম্প বা জুট মিলে অবস্থানরত পাকসেনাদের কোন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা লক্ষ্য অর্জন করে নিজ অবস্থানে ফেরৎ যায়। ঘোড়াশাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ধ্বংসের ফলে এখান অবস্থানরত পাকসেনাদের সাথে সারা দেশের পাকসেনাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
[৫৯৪] তানজিলা তওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত