কালীগঞ্জের পুবাইল রেলস্টেশনে অপারেশন, গাজীপুর
ডিসেম্বর মাসের ১৪ তারিখে গাজিপুরে কালিগঞ্জে পুবাইল রেলস্টেশনের সামনে পাকআর্মিদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। সুইসাইড গ্রুপের গ্রুপ কমান্ডার নজরুল ইসলামের গ্রুপের মোঃ রেজাইল করিম, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, কাজী শাহজাহান, রুহুল আমিন, মোঃ আক্তার হোসেনসহ মোট ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা, দেলোয়ার গ্রুপ, মামা গ্রুপ, কালীগঞ্জের গ্রুপ আরো ছোট ছোট গ্রুপ মিলিত হয়ে পাকসেনাদের আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। মিত্রবাহিনীর মেজর রুসিলভার ও মেজর প্রায় ১০০ জন সৈনিক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মিলিত হন ১২ তারিখের পর। নজরুল ইসলামের গ্রুপে মুক্তিযোদ্ধারা নাগরী, উলুখোলা, বান্ধাখোলা হয়ে পুবাইল রেলস্টেশনের দক্ষিণে (আনুমানিক ১ মাইল) রেললাইনের স্লিপার তুলে ফেলেন। ১৪ তারিখে মিত্রবাহিনীর মেজর রুসিলভারের নেতৃত্বে (প্রায় ১০০ জন সৈনিক) মুক্তিযোদ্ধারা সমন্বিত হয়ে সকাল থেকেই পুবাইল রেলস্টেশনের আঘাত হানে। মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে-পেছনে মিত্রবাহিনী। ২ শো পাকআর্মি পুবাইল রেলস্টেশনের ক্যাম্পে ও বাঙ্কারে স্থায়ীভাবে অবস্থান করছিল। মুক্তিযোদ্ধা টুকু পাকিস্তানী আর্মির বাঙ্কারে ঢুকে এল.এম.জি টেনে ধরলে ওর হাতের ৫টি আঙ্গুলই উড়ে যায়। সারাদিন গোলাগুলি হয়। শত্রুর গুলির আঘাতে কাজী শাহাজাহানের পেটে গুলিবিদ্ধ হয় ও বাবুল আক্তারের হাটের মধ্যম আঙুল উড়ে যায়। এই যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর তিনজন সৈনিক শহীদ হন। পাকবাহিনীর শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। কিছু পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা মোজাফর নামে একজন জীবিত পাকসেনাকে ধরে ক্যাপ্টেন হায়দারের কাছে সোপার্দ করেন। যুদ্ধ শেষে মিত্রবাহিনীর সদস্যরা কালীগঞ্জ রেলপথে টঙ্গী হয়ে ঢাকার দিকে অগ্রসর হন।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত