কালীগঞ্জ অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ
নভেম্বর মাসের শেষের দিকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানা কমান্ডার আব্দুর জব্বার খান পিনুর গ্রুপ, দেলোয়ার গ্রুপ, কমান্ডার নজরুলের গ্রুপের হাজী মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাম গ্রুপ, নাসির মীর, মেজবাহউদ্দিন, আসাদ মীর, শহীদুল্লাহ, মান্নান, মোঃ ইয়াদ আলী, বিল্লাল, শফি, মোঃ আমানউল্লাহ আমান ও মোস্তফার গ্রুপ একত্রে মিলিত হয়ে আব্দুর জব্বার খান পিনুর নেতৃত্বে কালীগঞ্জ অপারেশনে যান। মুক্তিযোদ্ধারা দু’দিন পূর্বে জানতে পেরেছিলেন কালিগঞ্জে পাকবাহিনীরা গ্রামবাসীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে মারছে। কাঞ্চন এলাকায় পুলের কাছে পৌঁছনের পর মুক্তিযোদ্ধারা দেখতে পান, আকাশে একটি হেলিকপ্টার একই জায়গায় স্থির হয়ে আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন পুল পার হয়েছেন। বাকিরা পার হননি। কালীগঞ্জের মুসলিম কটন মিলের সামনে যেতেই ৪টি হেলিকপ্টার থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বোম্বিং ও গুলি বর্ষণ শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সাথে পেরে উঠেন না। বাধ্য হয়ে অনেকে নদী সাতরিয়ে পিছু হটে পূর্ব পাড়ে চলে আসেন। এখানে দু’জন মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল ও শফি আহত হন। বিল্লালের পায়ের পাতা থেকে হাটু পর্যন্ত ৮টি মেশিন গানের গুলি বিদ্ধ হয়। বিল্লাল কোনো রকমে নদী পাড়ে এসে পড়ে যান। নদীর স্রোতে তিনি বোয়ালদি গ্রামে ভেসে আসেন। দু’জন খ্রিস্টান মেয়ে খালের পাড় থেকে তাঁকে দেখতে পেয়ে ডাঙায় তুলে আনে। প্রাথমিক সেবা শুশ্রষা করে। পড়ে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা খোঁজাখুঁজি করে তাঁর সংবাদ পেয়ে তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। সুইসাইড গ্রুপ কমান্ডার নজরুল ইসলামের মুক্তিযোদ্ধারা এনারগা ফিট করে পাকসেনাদের একটি হেলিকপ্টার মাটিতে ফেলে দেন।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত