উদালবন্য পাহাড়ে আম্বুশ, রাঙ্গুন্যা, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় উদালবন্য পাহাড়ে রাজাকার ও মিলিশিয়াদের ফাঁদে ফেলে হত্যা ও অস্ত্র হস্তগত করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা অভিযান পরিচালনা করেন। ২৮ নভেম্বর, ১৯৭১ সালে ক্যাপ্টেন করিম ও তার দুজন সহযোদ্ধা প্রদ্যুৎ কুমার ও স্বপন দাশ পদুয়ায় অবস্থিত টিএম আলীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে বিশেষ কাজে যান। তখন তাঁরা জানতে পারেন যে একদল রাজাকার ও মিলিশিয়া ২৯ নভেম্বর ধোপ-ছড়ি চন্দ্রঘোনা রাস্তা দিয়ে চন্দ্রঘোনার দিকে যাবে। মুক্তিযোদ্ধারা সিদ্ধান্ত নেন যে রাজাকারদের সুবিধাজনক স্থানে আক্রমণ করবেন। ২৯ নভেম্বর ভোর ৪টা টিএম আলীর দলের ৫ জন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক, ক্যাপ্টেন করিমের ৩ জন, মোট ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা পদুয়া হয়ে চন্দ্রঘোনা যাত্রা করেন। ভোর ৫টার দিকে উদালবন্যা পাহাড়ের কাছে পৌঁছান। পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্যাপ্টেন করিম পেছনের পাহাড়ে ও অন্য মুক্তিযোদ্ধারা সামনের পাহাড়ে অবস্থান নেন। পরিকল্পনা হয় ক্যাপ্টেন করিমের নির্দেশ গুলি ছোঁড়া হবে। দুপুর ১টায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় ১০০/১৫০ জনের একটি বিরাট মিলিশিয়া-রাজাকার গ্রুপ সশস্ত্র অবস্থায় এ পথে এগিয়ে আসে। তাঁরা পাহাড়ের কাছাকাছি আসার সাথে সাথে ক্যাপ্টেন করিমের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধা দল প্রথমে অতর্কিতে তাদের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। ৫টি এলেমজিও একসাথে ফায়ার শুরু করে।যৌথবাহিনী প্রথমে হতচকিত হলেও তাঁরা পাল্টা ফায়ার শুরু করে। এভাবে ১৫/২০ মিনিট উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। পড়ে ক্যাপ্টেন করিমের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপটি পাহার ত্যাগ করে পেছন দিকে ক্রুলিং করে খালের পাশ দিয়ে নিরাপদে পদুয়া টিএম আলীর ক্যাম্পে ফিরে আসেন।
[৫৯৭] কে. এম. আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত