এম.ভি তুরাগ (রসদ বহনকারী জাহাজ) অপারেশন
১৮ অক্টোবর রাত ১১ টায় নৌ-কমান্ডো আবিদুর রহমান আবীদের নেতৃত্ব হেদায়েত উল্লাহ, কালু, হাবিবুল হক খোকন, আনোয়ার হোসেন, আবু তাহের, কাজী এমদাদ, রহিম, আবুল হোসেন প্রমুখ শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদীর সংগমস্থলে আসেন। এর আগে কমান্ডো আবিদুর রহমান আবীদ নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে কলাগাছিয়া এসে তুরাগ জাহাজের অবস্থান জানার জন্য রেকি করেন। তুরাগ নামক জাহাজটিতে এন্টি এয়ার ক্রাফট গান স্থাপন করা ছিল এবং একটি গানবোট বন্দর থেকে শীতলক্ষ্যার মোহনা পর্যন্ত টহল দিত। এরই মাঝ দিয়ে আবিদুর রহমান আবীদ তার কমান্ডোদের নিয়ে পুলের ভেতর নামেন এবং কচুরিপানাকে অবলম্বন করে তুরাগ জাহাজের পাশে অবস্থান নেন। তাদের অবস্থান টের পেয়ে জাহাজের ওপর থেকে দুটো কুকুর অবিরাম ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। জাহাজে পাহারারত পাকহানাদার বাহিনী সার্চ লাইটের সাহায্যে তাদের তন্ন তন্ন করে খোঁজার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। নৌ-কমান্ডোরা জাহাজের গায়ে মাইন ফিট করে। ফেরার সময় আবুল হোসেন নামে এক নৌ-কমান্ডো পাক আর্মির গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই দিন পর মারা যান। নেভাল কমান্ডোদের শীতলক্ষ্যা নদীর শেষ মাথায় ও মেঘনা নদীর মোহনার পাড়ে শম্ভুপুরা টেকের কাছে থেকে ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা কভার দেন। মোঃ গিয়াসউদ্দিনের (নারায়ণগঞ্জ) গ্রুপের সহকারী কমান্ডার মোঃ নুরুজ্জামান, শাহাবুদ্দীন খান, কুতুব, সামসুদ্দীন, মিলন, দুলাল, সালাউদ্দীন, তপু, কালা সোবহান, আইয়ুব আলী লিয়াকত প্রমুখ এতে অংশ নেন। নৌ-কমান্ডো আবিদুর রহমান আবীদের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা দু’দিন আগে মীরকুন্ডি থেকে নৌকা ও পায়ে হেঁটে কলাগাছিয়া অবস্থান নেন। এই জাহাজে পাক আর্মিদের রসদ ১৪০০ ব্যাগ চাল, ৭০০ ব্যাগ চিনি ও ওষুধ ছিল। মাইন বিস্ফোরিত হয়ে জাহাজটি ধ্বংস হয়।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত