আতা মোহাম্মদ, মেজর ও আতিক মালিক, কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন, মেজর ও তারিক, লেফটেন্যান্ট ও এজাজ, ক্যাপ্টেন
স্থানঃ পিরোজপুর। অপরাধঃ ১৯৭১ সনের ৪ মে কর্নেল আতিক মালিকের নেতৃত্ব পাকবাহিনী পিরোজপুর শহরে প্রবেশ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পিরোজপুরেরে ৭টি থানায় মোট ৩০ হাজার লোককে তারা হত্যা করে এবং ধর্ষণ করে ৫ হাজার নারীকে। তেজদাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে খালের তীরে একসঙ্গে ২০ জন হত্যা করে। সোহাগদল গ্রামে এক বাড়িতে ৭ জনকে একই দড়িতে বেঁধে হত্যা করে পুঁতে রাখে। সোহাগদল সরকারী কলেজের সামনে ১১ জনকে হত্যা করে গাবতলা পুকুরে ফেলে দেয়। দেহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সতীশ শেখর রায়ের বাড়ির সামনে ১৭ জনকে হত্যা করে। জলাবাড়ির ৩৩টি গ্রাম পাকবাহিনীর এই সদস্যরা জ্বালিয়ে দেয়। কৃষ্ণনগর ও মাছিমপুর গ্রামে ঢুকেও তারা বহু বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। নাজিরপুর ও বানারীপাড়া থানায় কয়েকশ’ লোককে তারা হত্যা করে। এ ছাড়াও এখানকার বিভিন্ন গ্রাম, লঞ্চঘাট ও হাট-বাজারে তাদের নেতৃত্বে ব্যাপক গণহত্যা ও ধর্ষণযজ্ঞ চলে।
পিরোজপুর মহকুমার আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারাবাগান এলাকায় আশ্রয় নেয়া অসংখ্য নারী পুরুষ শিশু ও যুবক যুবতীর ওপর এদের নেতৃত্ব পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। ৭, ৯ এবং ১০ জুন সমগ্র পেয়ারাবাগান এলাকা ঘিরে ফেলে প্রায় ৩ হাজার নিরীহ নারী, পুরুষ, শিশুকে এরা নির্বিচারে হত্যা করে। হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি চালায় ধর্ষণ ও লুটপাট। কিরণ শিকদারের বাড়িতে ২০ জন মহিলাকে ধর্ষণ করে। কুড়িয়ানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে একটি ডোরায় ৪০০ জনকে এরা হত্যা করে পুঁতে রাখে। খারাবাগ গ্রামের অঞ্জলি কর্মকারের হাত-পা বেঁধে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে।
সাক্ষীঃ পেয়ারা বাগান হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী রমেন্দ্রনাথ শিকদার, অরুণ বরণ চক্রবর্তী ও বীরাঙ্গনা মনখুশী শিকদার। কর্নেল আতিক মালিক, মেজর সাজ্জাদ, লে. তারিক, ক্যাপ্টেন এজাজ ও তাদের সহযোগী অফিসারদেরকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত