You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.15 | রামপাল বধ্যভূমি | বাগেরহাট - সংগ্রামের নোটবুক

রামপাল বধ্যভূমি, বাগেরহাট

বাগেরহাটের রামপাল ডাকবাংলোর সামনের নদীর ঘাট ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রাজাকারদের ব্যবহার্য একটি উল্লেখযোগ্য বধ্যভূমি। রামপালের রাজাকার বাহিনী সমস্ত দিন ঘুরে ঘুরে যাঁদের ধরতে পারত, এখানে এনে তাঁদের জবাই করে নদীতে ভাসিয়ে দিত। রামপাল থানার ইসলামাবাদ নিবাসী হামিদ শেখ তখন রামপাল রাজাকার ক্যাম্পের জল্লাদের দায়িত্ব পালন করতেন। মানুষকে জবাই করার এক অদ্ভুত কৌশল তিনি আবিষ্কার করেছিলেন। মানুষ জবাই করার জন্য তিনি কুঠার ব্যবহার করতেন। এভাবে হত্যা করার জন্য হামিদ শেখের নাম তখন কুড়াল হামিদে পরিণত হয়ে যায়।
১৫ অক্টোবর, শুক্রবার রাজাকার বাহিনীর একটি অংশ “ভারতীয় দালালদের” অনুসন্ধানে গিলাতলা বাজারে আসে। বেলা দুইটার দিকে গিলাতলা গ্রাম থেকে ৩ জন এবং পার্শ্ববর্তী সুন্দরপুর গ্রাম থেকে ৩ জন, মোট ৬ জন লোককে ধরে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার ঠিক আগে আগে ছয়জনকে চোখ বেঁধে রামপাল ডাকবাংলো ঘাটের বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সহযোগী রাজাকাররা হতভাগ্যদের পালাক্রমে কুড়াল হামিদের হাতে ধরিয়ে দেয়। কুঠারের এক এক কোপে ধড় থেকে মাথাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীর পানিতে ডুবে যেতে থাকে। এর মধ্যে একবার কুড়াল হামিদের হাত ফসকে গেলে খানিকটা আহত হয়ে অজিত পাল মুণ্ডসহ নদীতে ভেসে যান। কিছুদূর যেতে না যেতে এক সহৃদয় লোকের চোখে পড়ায় তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
[১২৪] স্বরোচিষ সরকার

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত