মিরসরাই বধ্যভূমি ও গণকবর, চট্টগ্রাম
পাকবাহিনী এপ্রিল মসে মিরসরাইয়ে রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটি গঠনের পর হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ ও নানা ধরনের নির্যাতন চালাতে থাকে। মিরসরাইয়ের অদূরে লোহারপুল, হিঙ্গুলী ব্রিজ, তছি মিয়ার পুল, করেরহাট ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর পাড় (পূর্ব-পশ্চিমে), হিঙ্গুলী কোর্টের পাড়, ছুটি খাঁ দিঘির পাড়সহ অনেক জায়গায় নিরীহ মানুষকে হত্যা করে গণকবর দেয়। স্বাধীনতার পর মিরসরাই পশ্চিম হিঙ্গুলী গ্রামে জঙ্গলে ঘেরা একটি অন্ধকার পুকুরে ৮৩টি নরকঙ্কাল পাওয়া যায়। হত্যার পর এই পুকুরে হতভাগ্যদের ফেলে যায়। এছাড়া মুক্তিবাহিনী ফেনী রেলসেতুর দক্ষিণ অংশ ধ্বংস করলে পাকিস্তানি বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে নোয়াখালীর ছাগলনাইয়ার একটি গ্রামের ২৪০ জনকে ধরে এনে এখানে হত্যা করে। সেতুটি বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এমন কোনো দিন যায়নি, যেদিন তারা এ স্থানে বাঙালিদের হত্যা করেনি।
এই হত্যাকাণ্ড এবং গণকবর সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এ দেশীয় কিছু মানুষ। পাকবাহিনীকে সহযোগিতার পাশাপাশি তারা বাঙালিদের ওপর অত্যাচার চালায়, মা-বোনদের ইজ্জত কেড়ে নেয়। লোহার পুলের নিচে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ছুটি খাঁ দিঘির পাড়ে গণকবরের সৃষ্টি করা হয়। হিঙ্গুলী ব্রিজের নিচে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে নিরীহ জনতাকে।
[১২] গোপাল দত্ত
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত