মান্দাইল বধ্যভূমি, কালিগঞ্জ, গাজীপুর
রাতে পাকহানাদার বাহিনী আসে কিনা এ এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা সেটা পালাক্রমে পাহারা দিত। সেদিন দায়িত্বে ছিলেন মান্দাইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বেঞ্জু। কালিগঞ্জেরই একটি গ্রাম মান্দাইল। পাহারা শেষ করে ভোরে এক বন্ধুর বাসায় এসে শুয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই গোলাগুলি শুরু হয়। পাকবাহিনী গ্রামের যাকে যেখানে যে অবস্থায় পেয়েছে সেভাবেই গুলি করেছে। বেঞ্জুর ভাই কামরুল হাসান আন্টু এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বেঞ্জু তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে কালিন্দীতে এক খালার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সে তখন নবম শ্রেণীর ছাত্র। খালার বাড়িতে এক ঘরে আরও কয়েকজনের সঙ্গে লুকিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচতে পারেনি, পাকসেনারা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে নির্বিচারে তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। বেঞ্জুর কণ্ঠনালি ভেদ করে গুলি বেরিয়ে যায়। খবর পেয়ে বেলা নয়টার দিকে বেঞ্জুর ভাই আন্টু এবং তার আরও এক ভাই লাশ আনতে সেখানে যান। আন্টু জানান, ক্ষেতের মধ্যে খালের পাশে অসংখ্য মানুষকে আহত ও মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পাকসেনারা কালিন্দী, মান্দাইল ও তাঁর আশপাশের গ্রামের মানুষকে গুলি করে এখানে ফেলে রেখেছিল। তবে এ পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে কাউকে বাঁচানোর সুযোগ ছিল না।
[৩৪] দিলরুবা বেগম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত