বেতিয়া গণকবর, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা
১১ নভেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গা ঘেঁষে চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারায় পাকবাহিনীর হাতে ৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মমভাবে নিহত হন। নিহত মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যুক্ত গেরিলা বাহিনীর সদস্য। স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ এ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন নিজাম উদ্দিন আজাদ, বশিরুল ইসলাম, আওলাদ হোসেন কাইয়ুম, জহিরুল হক দুদু, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সফিউল্লাহ, কাদের মিয়া, সিরাজুল ও মনির।
৭৮ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অতিক্রম করার জন্য সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে গেলে সড়কের অপর পাশে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা পাকবাহিনীর অতর্কিত ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলেই ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ সময়ে দলের অন্যরা পাশের ধানক্ষেতে শুয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করেন। মুক্তাঞ্চল গঠনের জন্য তাদের সাথে নিয়ে আসা অস্ত্রের অধিকাংশই প্যাকেট বন্দি থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনোরূপ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। পাকবাহিনীর হামলায় মুক্তিযোদ্ধারা বেতিয়ারার মাঠে তাদের বহনকৃত অস্ত্রের প্যাকেটগুলো এবং ৯ শহীদের লাশ ফেলে পিছু হটে যান। ঘটনার পরদিনও লাশগুলো বেতিয়ারার মাঠে পড়ে থাকে। ১৩ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশে স্থানীয় চেয়ারম্যান লাশগুলোকে একত্রিত করে একটি গর্তে মাটিচাপা দেন। দেশ স্বাধীন হবার পর লাশগুলোর হাড়গোড় সে গর্ত থেকে উদ্ধার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেতিয়ারায় রাস্তার পাশে জানাজা দিয়ে গণকবর দেয়া হয়।
[২২৯] খায়রুল আহসান মানিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত