বার্মা ইস্টার্ন গণহত্যা, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা ছিল অবাঙালি রাজাকারদের শিবির। শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে রাজাকারদের সহায়তায় পাক সেনাবাহিনী বন্দরে প্রবেশ করে ৪ এপ্রিল ভোররাতে। হঠাৎ মেশিনগানের তীব্র টা টা টা শব্দের সঙ্গে শুরু হল অসহায় মানুষের মিলিত কণ্ঠের হৃদয়বিদারক আর্তনাদ। পাক সেনাবাহিনীর দোসর অবাঙালি ও রাজাকাররা নিরপরাধ ব্যক্তিদের ধরে জড়ো করতে লাগল সিরাজউদৌল্লা ক্লাব মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে। নবীগঞ্জ, বন্দর, একরামপুর গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের মালামাল লুট করে।
আটককৃত ব্যক্তিদের ওপর জল্লাদরা চালাল মেশিনগানের গুলি। মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মাটিতে লুটয়ে পড়ল ৫৪ জন ব্যক্তি। জল্লাদদের সাথে আলবদর, রাজাকাররাও অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। হাবিব মিয়া জেলে বাড়ি থেকে মূলি বাঁশের বেড়া খুলে এনে বিছিয়ে দিল যন্ত্রণাকাতর শরীরগুলোর ওপর। বেড়ার মধ্যে গুলি ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এপ্রিল মাসের ২৩-২৪ তারিখে বার্ড কোম্পানির ভেতরে রানা বাহিনী (মিলিশিয়া) ক্যাম্প করে। শুরু হলো যুবতী মেয়েদের ধরপাকড়। অত্যাচার, হত্যা আর পাশবিকতার তাণ্ডবলীলা চলল। জল্লাদরা ধরে নিয়ে যায় নকু মিয়ার স্ত্রী কুলসুমকে।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত