You dont have javascript enabled! Please enable it! চেচুড়ী গ্রাম গণহত্যা, ডুমুরিয়া | খুলনা - সংগ্রামের নোটবুক

চেচুড়ী গ্রাম গণহত্যা, ডুমুরিয়া, খুলনা

চেচুড়ী গ্রামটি খুলনার ডুমুরিয়া থানার ধামালিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। পাক সেনাদের এবং তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের প্রতিহত করতে চেচুড়ী গ্রামে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হয়। ফলে এ গ্রামে কোন পাক সেনা রাজাকার ঢুকতে পারে না। এই অবস্থায় ডুমুরিয়ার রাজাকার কমান্ডার চেচুড়ী গ্রামের বাসিন্দা গাউসুল আজম গাজী ও তার পিতা পিস কমিটির চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন গাজী যৌথভাবে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের নিয়ে এক সভা আহ্বান করে। সভায় তারা জানায় পাক সেনারা এ গ্রামে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হামলা হলে কেউ রক্ষা পাবে না। সকল বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হবে। সভায় তারা আরো জানায়, যদি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যরা রাজাকার বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করে তবে হামলা বন্ধ করা সম্ভব। সভায় উপস্থিত প্রবীণ ব্যক্তিরা বলেন, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর এই গ্রামের শান্তি এবং আমাদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা কে দিবে? তখন রাজাকার মোসলেম উদ্দিন গাজী পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে তাদের নিরাপত্তা বিধানের ওয়াদা করে। তার এই ওয়াদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে আলোচনার পর স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর ১২ জন সদস্য চেচুড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আত্মসমর্পণ করে। পরে রাজাকাররা আলোচনার নামে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যদের কাটেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায় এবং গ্রামবাসীদের চলে যেতে বলে। পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করায় সহজ সরল গ্রামবাসী যার যার বাড়ি চলে যায়। পরে রাজাকাররা সেদিন রাতেই ১২ জন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যদের ব্রাশ ফায়ার করে। এতে ১১ জন নিহিত হয়।
[১২৪] মোহাম্মদ সুলতান আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত