গৌরীনগর গ্রাম গণহত্যা, সিলেট
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার এ গ্রামটিকে একটি নিরেট পাড়া-গ্রামই বলা যায়। সালুটিকর ফেরিঘাট হয়ে সিলেটের সাথে এর যোগযোগ। এখানেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গড়ে তোলে একটি শক্ত ঘাঁটি বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ধরে এনে এখানে হত্যা করা হতো। পাকসেনাদের ভেতর থেকেই একটি পৃথক গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। অক্টোবর মাসের শেষদিকে এক সকালে এক দল পাকসেনা এসে হাজির হয় গৌরীনগর গ্রামে। তারপর তারা গ্রামে অবস্থানরত সমস্ত লোকজনকে এনে জড়ো করে কোম্পানীগঞ্জ সড়কের পাশে। চারদিকে সেনা বেষ্টনী দিয়ে বন্দিদের ওপর শুরু করে নির্যাতন। দীর্ঘক্ষণ ধরে অত্যাচার করার পর বাছাইপর্ব আরম্ভ হয়। ক্ষতবিক্ষত তখন সবাই। অনেকেই গুরুতরভাবে আহত। হাত-পা ভেঙে গেছে কারো কারো। কারো বা মুখমণ্ডল ও মাথা ভয়ানকভাবে থেঁতলানো। এ অবস্থায় মূল দল থেকে আলাদা করা হলো পাঁচজনকে। তারপর সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের পাশে একটি সুশৃঙ্খল সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হলো তাঁদের লক্ষ্য করে। তারপর অস্ত্রের মুখে আরো কিছু লোককে এখানে আনা হয় এবং তাদের সাহায্যে দুটি গর্ত খুঁড়িয়ে তাতে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয় পাঁচজন শহীদের লাশ।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত