কুলাউড়া রেলওয়ে কলোনি গণহত্যা, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া একটি রেল জংশন স্টেশন। রেলওয়ের অনেক কর্মচারী এখানে কর্মরত। তাঁদের বসবাসের জন্য রয়েছে রেলওয়ের নিজস্ব কলোনি। এই রেল কলোনির লোকজন মুক্তিযুদ্ধে যোগ্য অবদান রেখেছেন। এখানকার এক রেল কর্মচারীর ছেলে নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া তখন থানা ছাত্রলীগের প্রধান নেতা। ফারুক আহমদ ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। মুন্নী ছাত্রলীগের নেত্রী। তাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কুলাউড়ায় আসার পরপরই রেলওয়ে কলোনিতে হামলা চালায়। ধরা পড়েন নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। একই সাথে ধরা পরেন এখলাছুর রহমান। এখলাছুর রহমান ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী। দু’জনকেই পাকবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। কুলাউড়া-সিলেট রেলপথের একটা সিগন্যাল পোষ্টের কাছে এই দুজন সম্ভাবনাময় তরুণকে কবরস্থ করা হয়। ছাত্রলীগ কর্মী হানিফকে হত্যা করা হয়েছিল বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে।
ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম ভুঁইয়াকে হত্যার সময় শামসুল আলম নামে আর একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়। সে ছিল রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। পাকবাহিনী মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়ার দিকে আসার সময় শামসুল আলম তেঙ্গরা বাজার থেকে রিকশাযোগে বাড়ি ফিরছিল। গোঁবিন্দবাটির পূর্ব থেকে পাকবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে এসেছিল।
এরপর থেকে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত কুলাউড়া রেল কলোনির অসংখ্য লোককে হত্যা করেছে পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা। বহু লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটিয়েছে তারা।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত