ঈশ্বরদী গণহত্যা, পাবনা
পাকসেনারা ১১ এপ্রিল ঈশ্বরদী পৌছায়। ১২ এপ্রিল তাঁদের সাহায্যে অবাঙালিরা সমস্ত ঈশ্বরদী শহরকে নরকে পরিণত করে। ঈশ্বরদী বাজারের সমস্ত দোকানপাট লুট করা হয়। বহু বাঙালি সামান্যতম নিরাপত্তার আশায় ঈশ্বরদী জামে মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু মসজিদে গিয়েও তারা শেষ পর্যন্ত রেহাই পাননি। পাকিস্তানি বিরোধী সন্দেহে অনেককে পাক বর্বরদের হাতে তুলে দেয়া হয়। আর এ কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করে কুখ্যাত জামায়াত নেতা খোদা বকস খাঁ। এই মসজিদেই আব্দুল মোত্তালেব খান, রফিক পাটোয়ারী, মোয়াজ্জেম হোসেন ও হেলালসহ আরও অনেককে পাকসেনা ও তাঁদের দোসররা সেদিন হত্যা করেছিল।
প্রতিশোধপরায়ন অবাঙালিরা সেদিন বহু নিরীহ বাঙালিকে সন্দেহ ও ক্রোধবশত পাক পশুদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এদিন ঈশ্বরদীর বিশিষ্ট ছাত্রলীগ কর্মী আক্তার হোসেন খোকন সহ বেশ কিছু যুবককে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে অপারেশন চালানোর অভিযোগ এনে ধরিয়ে দেয়া হয়। রাজশাহীস্থ পাকবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে দিনের পর দিন তাঁদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। পরবর্তিকালে বন্দিত্ব থেকে ছাড়া পেয়ে ঈশ্বরদী মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে অবাঙালিরা খোকনকে হত্যা করে।
[১৭] আবুল কালাম আজাদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত