বিপ্লবী বাংলাদেশ
১২ই ডিসেম্বর ১৯৭১
পতনের খতিয়ান
যশোর ক্যান্টনমেন্ট, আখাউড়া, লাকসাম, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, লালমণিরহাট, এবং—প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ!
গত সংখ্যার ‘বিপ্লবী বাংলাদেশ’ (৫ই ডিসেম্বর) দেখুন। তাতে এই সব অঞ্চলে লড়াই চলার কথা দেওয়া আছে। শুধু গত সংখ্যায় কেন, বিগত পাঁচ মাস ধরে এই সব জায়গায় মুক্তিবাহিনী বারম্বার আঘাত হেনেছেন। আজ সগর্বে এসব অঞ্চলের মুক্তি ঘোষণা করার দিন এসেছে।
সম্ভবতঃ এই সংখ্যা আপনার হাতে পৌঁছতে পৌঁছতেই সমগ্র বাংলাদেশ মুক্ত হয়ে যাবে। রাজধানী ঢাকার পাক সিংহাসন আজ টলোমলো। ১০ই ও ১১ই ডিসেম্বর সেখানে কোন আক্রমণ চালানো হবেনা—যাতে বিদেশী নাগরিকেরা নির্বিঘ্নে আপনাপন দেশে ফিরতে পারেন। তারপরই ঢাকা আক্রান্ত হবে। এর একমাত্র ফল হবে বাংলাদেশের মুক্তি।
মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণ রোধ করার ক্ষমতা আজ আর খান সেনাদের নেই। চট্টগ্রাম, চালনা, ও মঙ্গলা—এই তিনটি বন্দর ভারতীয় নৌবাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে। মঙ্গলাতে মুক্তিবাহিনী তার দফতার খুলে বসেছে। অন্য বন্দরগুলোতেও মুক্তিবাহিনী প্রবল আক্রমণ চালাচ্ছে। পাক হানাদারেরা এখন কলে পড়া ইঁদুরের মতো শেষের প্রহর গুণছে। না পারছে তারা বিমানে করে পালাতে, না পারছে জাহাজে করে সরে পড়তে।
বাঙালী অনেকদিন ধরেই স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দেখছে। আজ এসেছে স্বাধীন বাংলায় সদর্পে পা ফেলার দিন।
সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল