You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.14 | পাপের প্রতিফল মৃত্যু | বিপ্লবী বাংলাদেশ - সংগ্রামের নোটবুক

বিপ্লবী বাংলাদেশ
১৪ নভেম্বর ১৯৭১

পাপের প্রতিফল মৃত্যু

‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত মানুষকে একদিন না একদিন করতেই হয়’ এ প্রবাদ আজ বাংলাদেশের বিশ্বাস-ঘাতক হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের মানুষের কাছে বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
স্বৈরাচারী আয়ুবের পোষ্য পুত্র একদা যে রাষ্ট্র সংঘে সদম্ভে ঘোষণা করেছিলেন, “দরকার হইলে ঘাস খাইয়া হাজার বছর যুদ্ধ চালাইব”। এ হেন অশান্তি প্রিয় আহম্মদ লারকানার নবাবজাদা ভূট্টোর পরামর্শেই জঙ্গী ইয়াহিয়া বাংলাদেশে ১৫ লক্ষ মানুষের রক্ত পান করে আজ মত্ত হাতীতে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলার মুক্তি বাহিনীর ক্রমবর্ধমান সাফল্যে জঙ্গী ইয়াহিয়া আজ চোখে কানে আঙ্গুল দিয়ে ভূট্টোকে বলছেন “তোমার জন্যই আমার আজ এই পরিণতি, অতএব এখন তুমি আমাকে রক্ষা করো।” পাকিস্তান ও জঙ্গী ইয়াহিয়াকে রক্ষা তথা অখন্ড পাকিস্তানে নিজের প্রধান মন্ত্রীত্ব পাওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার প্রয়াসে নবাবজাদা সে দিন সুদূর চীনে গিয়েছিলেন সমর্থন পাওয়ার আশায়। চীনের সমর্থন যে কতটুকু আদায় করতে পেরেছেন ভূট্টো সাহেব তা ভবিষ্যত বলবে। তবে আমরা জানি নবাবজাদাকে চীনের যুব সমাজ সাদরে গ্রহণ করেনি, করেছে বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। চীন থেকে আশা কি নিরাশা নিয়ে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বদেশ তাঁকে সাদর সম্ভাষণ জানাল বুলেট দিয়ে।
অল্পের জন্য ভূট্টো সাহেবের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে সত্যি কিন্তু এ দিন যে আবার ফিরে আসবেনা তা কে বলতে পারে। যেহেতু, বাংলার পনেরো লক্ষ মানুষের আত্মার শান্তি যে এখনো মেলেনি। মোনেম খানের পাপ মোনেম খানকে পরলোকে পৌঁছে দিয়েছে। ভূট্টোর পাপও ভূট্টোকে সেখানে পৌঁছে দেবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মার শান্তি যে সেখানেই নিহিত।

সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল