১ এপ্রিল ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন এবং প্রতিরোধ যুদ্ধ – দিনাজপুর রংপুর
এদিন দিনাজপুর পাক বাহিনীকে দিনাজপুর থেকে সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করা হয়। সৈয়দপুর বা পার্বতীপুর থেকে পাক আক্রমন মোকাবেলায় সুবেদার রবের ইপিআর বাহিনী রাজবাড়ী থেকে শিবপুর নালা এবং ভুষির বন্দরে অবস্থান নেয়। ফুলবাড়ি থেকে ট্রেনযোগে পাক বাহিনীর আগমন ঠেকাতে আনন্দনগর থেকে চিরির বন্দর পর্যন্ত ইপিআর বাহিনীর আরেকদল অবস্থান নেয়।
কাকিনা রেল ষ্টেশনের কাছে সুবেদার বোরহান দুটি মিশ্র কোম্পানি গঠন করেন। একটির অধিনায়ক করেন মুজাহিদ কমান্ডার তমিজ উদ্দিনকে (পরে নিহত) আরেকটির অধিনায়ক করেন আনসার কম্যান্ডার রিয়াজ উদ্দিনকে। রিয়াজউদ্দিনের কোম্পানি গঙ্গাছড়ায় ঘাট পাহারায় নিয়োজিত থাকে। এদিন সুবেদার খালেক ৫০ জনের একটি দল নিয়ে দিনাজপুরের উত্তরে পাক বাহিনীর মোকাবেলা করেন। তার দলের ৫ জন নিহত হয়। কিছু আহত সৈন্যকে বদরগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট এর ৬-৭ মাইল দূরে ক্যাপ্টেন আনোয়ারের সাথে সুবেদার খালেকের দেখা হয় তিনি যুদ্ধের ময়দানের ঐতিহ্য রক্ষায় খালেকের রেঙ্ক ব্যাজ খুলে ফেলে দেন।
পার্বতীপুরে পশ্চিম পাকিস্তানী মেজর সাফায়েতের অধীনে ৫০ জন বাঙ্গালী ইপিআর ছিল। সুবেদার খালেক সেখানকার সুবেদার রহমত উল্লাহ্র কাছে সংবাদ পাঠান যাতে তারা বিদ্রোহ করে সরে পরেন। রহমত উল্লাহ বিদ্রোহ করে সরে পরেন। পথে সুবেদার খালেকের সাথে দেখা হলে তিনি জানান তারা মেজর সাফায়েত কে হত্যা করেছে। তিনি আরেকটি সংবাদ পাঠান ঘোড়াঘাটে বাঙ্গালী মেজর নিজামের কাছে। তিনি তার সিও এর অনুমতি ছাড়া ঘোড়াঘাট ত্যাগ করতে অস্বীকার করেন। ঘোড়াঘাটে পাক সেনাদের সাথে বিদ্রোহী বাঙ্গালী সেনাদের সংঘর্ষে তিনজন বাঙালি নিহত হয়। তাদের দাফনের জন্য সুবেদার আওয়ালকে ১২ জন সৈনিকসহ পাঠালে তিনি লাশসহ রংপুরের কারমাইকেল কলেজের কাছে আসলে সে বহরে আবারও পাক হামলা হয় সেখানে ১১ জন বাঙ্গালী সৈন্য নিহত হয়। তিনি গ্রামে পলায়ন করলে গ্রামবাসী তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। সৈয়দপুরের ২ মাইল দূরে একটি ভবনে পাকিস্তানী সৈন্যরা ৩৩ জন বাঙ্গালী সৈন্য হত্যা করে তাদের মধ্য থেকে একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। খালেকের বাহিনী বদরগঞ্জের খোলাহাটিতে অবস্থান নেয়।