সংবাদ
৯ই আগষ্ট ১৯৬৬
সেন্ট্রাল জেলের অভ্যন্তরে শেখ মুজিবের মামলার শুনানী শুরু
(আদালত বার্তা পরিবেশক)
গতকাল (সােমবার) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত মামলার শুনানী শুরু হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব আফসারউদ্দিন আহমদের বিশেষভাবে আয়ােজিত এক এজলাসে পাকিস্তান দেশরক্ষা বিধির ৪৭(৫) ধারাবলে আনীত মামলায় ৫ জন সাক্ষীর-৩ জন সরকারী রিপাের্টার ও দুইজন পুলিশ কর্মচারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিগত ২০শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশন উপলক্ষ্যে পল্টন ময়দানে আয়ােজিত এক জনসভায় আপত্তিকর বক্তৃতা প্রদানের অভিযােগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
শুনানী শুরু হওয়ার পূর্বে বিবাদীপক্ষের কৌসুলী এক আবেদনে ঢাকা বিচারালয়ের (ম্যাজিষ্ট্রেট) যে কোন কক্ষে বিচার অনুষ্ঠানের অনুরােধ জানান। আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তির বন্ধু-বান্ধব ও আত্নীয়-স্বজনদের কোর্টে উপস্থিত থাকার অনুমতি চাহিয়া অপর একটি আবেদন করা হইলে উহা মঞ্জুর করা হয়।
উল্লেখযােগ্য, জেল কর্তৃপক্ষ বিবাদীর আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে আবেদন জানানাের জন্য আদালত কক্ষে প্রবেশ করিতে দেন নাই। তাহারা সকাল ৯-৩০ হইতে জেলখানার সদর দরজায় অপেক্ষা করেন। বিবাদীর কৌসুলী আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন যে, জেল কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫২ ধারা রীতিমত অমান্য করিয়াছেন। উক্ত ধারায় উল্লেখ রহিয়াছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালতের কাৰ্য্যের বিঘ্ন না ঘটে, ততক্ষণ সকলেরই আদালত কক্ষে প্রবেশাধিকার রহিয়াছে। প্রতিউত্তরে সহকারী সরকারী উকিল জনাব এম এস বখৃত বলেন যে, স্থানাভাবে জেল কর্তৃপক্ষ আদালত কক্ষে কাহাকেও প্রবেশ করিতে দেন নাই।
অবশেষে মাননীয় হাকিম আদালতের বাহিরে অপেক্ষমাণ ব্যক্তিবর্গকে আদালত কক্ষে উপস্থিত হইতে অনুমতি দেন। আগামী ১০ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মামলার শুনানী মুলতবী রাখা হয়।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব