You dont have javascript enabled! Please enable it! 1966.03.21 | পল্টনে আওয়ামী লীগের জনসভা- মুজিব কর্তৃক মওদুদী ও চৌধুরী মােহাম্মদ আলীর সমালােচনা | দৈনিক পাকিস্তান - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক পাকিস্তান
২১শে মার্চ ১৯৬৬

পল্টনে আওয়ামী লীগের জনসভা
মুজিব কর্তৃক মওদুদী ও চৌধুরী মােহাম্মদ আলীর সমালােচনা
(স্টাফ রিপাের্টার)

প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের দুইদিনব্যাপী সম্মেলনের শেষে গতকল্য রবিবার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান তাহার ৬-দফা আদায়ের জন্য দেশবাসীকে ব্যাপক আন্দোলনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তান হইতে পশ্চিম পাকিস্তানে সােনার মূল্য অনেক কম। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট পার্থক্য রহিয়া গিয়াছে। কিন্তু তৎসত্ত্বেও এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য দুই অর্থনীতির প্রবর্তন করিতে বর্তমান সরকার রাজী নহেন বলিয়া তিনি অভিযােগ করেন।
তিনি আরও দাবী করেন যে, দীর্ঘকাল হইতে যে, স্বায়ত্তশাসনের দাবী জানানাে হইয়াছে, ৬-দফা প্রকৃতপক্ষে সেই স্বায়ত্তশাসনেরই বাস্তব মূর্তি।
৬-দফা সম্পর্কে দেশের বিভিন্ন মহলে যে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হইয়াছে। তাহার উল্লেখ করিয়া তিনি বলেন যে, তাহারা পার্লামেন্টারী শাসনব্যবস্থা, জনগণের সার্বজনীন ভােটাধিকার, কর আদায়ের এখতিয়ার পূর্ব পাকিস্তানের হাতে প্রত্যর্পণ এবং পূর্ব পাকিস্তান কর্তৃক অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পূর্ব পাকিস্তানেই ব্যয় করার দাবী জানাইয়াছেন। তিনি আরও বলেন যে, পশ্চিম পাকিস্তানীদের সহিত তাহার কোন শত্রুতা নাই।
তিনি বলেন যে, তাঁহার ৬-দফার মধ্যে তিনি কেন্দ্রের হাতে দেশরক্ষা ও বৈদেশিক নীতি অর্পণের কথা বলিয়াছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা নেজামে ইসলাম দলের চৌধুরী মােহাম্মদ আলী ও জামাতে ইসলামীর মওলানা মওদুদীর সমালােচনা করেন। তিনি বলেন যে, চৌধুরী মােহাম্মদ আলীও হঠাৎ পূর্ব পাকিস্তানীদের দরদী হইয়া পড়িয়াছেন।
শেখ মুজিব বলেন যে, চৌধুরী মােহাম্মদ আলী দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পূর্ব পাকিস্তানের উপর যেমন অবিচার চালানাে হইয়াছে তেমন আর কখনও হয় নাই। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থ সম্পর্কে কোন কথা বলার অধিকার চৌধুরী সাহেবের নাই।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান যদি একই রকম শক্তিশালী ও উন্নত হয়, তাহা হইলেই পাকিস্তান অধিকতর শক্তিশালী হইবে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব