দৈনিক ইত্তেফাক
২৭শে ডিসেম্বর ১৯৬৫
প্রেসিডেন্টের সহিত বিরােধী দলীয় নেতাদের বৈঠক
(ষ্টাফ রিপাের্টার)
গত শনিবার সকালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ঢাকাস্থ প্রেসিডেন্ট ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের বিরােধী দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। এক ঘণ্টারও অধিককাল স্থায়ী এই বৈঠকে বিশেষ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যক্ষ ভােটাধিকার, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, দুর্নীতি দমন, দেশের দুই অংশের যােগাযােগ ব্যবস্থা ও শাসনতন্ত্রের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিরােধী দলের নেতৃবৃন্দ প্রেসিডেন্টের সহিত খােলাখুলি আলােচনা করেন। এই আলােচনায় বিরােধী দলের যে নেতৃবৃন্দ শরীক হন, তাহারা হইলেন জনাব নূরুল আমীন, জনাব আতাউর রহমান খান, মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, শেখ মুজিবর রহমান, জনাব আবু হােসেন সরকার, জনাব হামিদুল হক চৌধুরী, জনাব আবদুস সালাম খান, জনাব ইউসুফ আলী চৌধুরী, জনাব শাহ আজিজুর রহমান, জনাব মাহমুদ আলী, জনাব জহীরুদ্দীন, জনাব তাজুদ্দীন আহমদ, জনাব ফরিদ আহমদ, খাজা খয়েরুদ্দীন,জনাব শফিকুল ইসলাম, জনাব আবুল কাসেম, খাজা আহসানউল্লাহ, মওলানা আবদুর রহীম, জনাব আবদুল মালেক উকিল ও জনাব আসাদুজ্জামান খান।
সরকারপক্ষে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গভর্ণর জনাব আবদুল মােনেম খান, কেন্দ্রীয় তথ্য ও বেতার দফতরের মন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দীন, কেন্দ্রীয় যােগাযােগমন্ত্রী খান এ, সবুর, কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী জনাব আলতাফ হােসেন, প্রাদেশিক শিল্পমন্ত্রী দেওয়ান আবদুল বাসেত ও প্রাদেশিক কৃষিমন্ত্রী জনাব ফকির আবদুল মান্নান।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযােগ্য যে, শনিবারের এই আলােচনায় অংশগ্রহণের জন্য মওলানা ভাসানীসহ “ন্যাপ নেতৃবৃন্দ যথারীতি আমন্ত্রিত হইলেও তাহাদের কেহই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁহাদের এই অনুপস্থিতির কারণ জানা যায় নাই।
পরবর্তী পর্যায়ে, গতকল্য সন্ধ্যার পর প্রেসিডেন্ট আইয়ুব এন-ডি-এফ নেতৃবৃন্দের সহিত পৃথকভাবে আর একদফা আলােচনা করেন। জনাব আতাউর রহমান খান, জনাব হামিদুল হক চৌধুরী, জনাব ইউসুফ আলী চৌধুরী ও জনাব মাহমুদ আলী এই আলােচনায় শরীক হন। জনাব নূরুল আমীনেরও এই বৈঠকে শরীক হওয়ার কথা থাকিলেও আকস্মিক অসুস্থতার দরুন তিনি শরীক হইতে পারেন নাই।
গতকল্যকার এই আলােচনাকালে গভর্ণর জনাব আবদুল মােনেম খানও উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব