You dont have javascript enabled! Please enable it! 1964.10.27 | ফরিদপুরের জনসভায় শেখ মুজিবঃ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাফল্যের মধ্যেই জনগণের মুক্তি নিহিত | ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

ইত্তেফাক
২৭শে অক্টোবর ১৯৬৪

ফরিদপুরের জনসভায় শেখ মুজিবঃ
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাফল্যের
মধ্যেই জনগণের মুক্তি নিহিত

(ইত্তেফাকের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি)
ফরিদপুর, ২৬শে অক্টোবর- অদ্য সন্ধ্যায় স্থানীয় অম্বিকা ময়দানে আয়ােজিত এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান দেশে সংঘবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়িয়া তােলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই আন্দোলনের ফলে জনসাধারণ শুধু তাহাদের গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ ফিরিয়া পাইবে না, উপরন্তু বর্তমান সরকারের বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারমূলক ব্যবস্থার শিকারে পরিণত হওয়ার হাত হইতে অব্যাহতি লাভ করিবে।
আওয়ামী লীগ সম্পাদক আশা প্রকাশ করিয়া বলেন, যে গণচেতনা পরিলক্ষিত হইতেছে, তাহা নিশ্চয় আসন্ন নির্বাচনে প্রতিফলিত হইবে এবং ইনশাআল্লাহ মাদারে মিল্লাত মিস ফাতেমা জিন্না প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হইবেন। শেখ সাহেব ঘােষণা করেন, মাদারে মিল্লাত নির্বাচিত হইলে তিনি (মাদারে মিল্লাত) বর্তমান শাসনতন্ত্র সংশােধন করিবেন এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের ভােটাধিকারের ভিত্তিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করিয়া পার্লামেন্টারী পদ্ধতির সরকারের পুনঃপ্রবর্তন করিবেন।
মওলানা আবদুল আলী এম, পি,এ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন ও জনাব শামসুদ্দীন মােল্লাও বক্তৃতা করেন।
শেখ মুজিব সামরিক শাসনের ইতিবৃত্ত বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৫৮ সালের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ইস্কান্দর মীর্জা ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহ পতনের হাত হইতে নিজেদেরকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নির্বাচনের পূর্বে সামরিক আইন জারি করিয়া জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনাইয়া লয়। তিনি বর্তমান শাসনতন্ত্রের কঠোর সমালােচনা করিয়া বলেন যে, এই শাসনতন্ত্রে সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা হইয়াছে। তিনি বলেন, সামরিক শাসনামলে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হইয়াছিল; কিন্তু সরকার একটি মামলাও প্রমাণ করিতে পারেন নাই।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব