৩১ মার্চ ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ – কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়াতে গতকালের যুদ্ধে পাক ২৭ বালুচের সৈন্যরা জিলা স্কুলে আশ্রয় নেয়। মেজর ওসমানের বাহিনী আজ আবার তাদের উপর আক্রমন করে। ওসমানের বাহিনীকে সহায়তা দেয়ার জন্য হাজার দুয়েক লোক দেশীয় অস্রে বের হয়ে আসে এদের কারও কারও হাতে ৩০৩ রাইফেলও ছিল। সকাল ১০ টার দিকে তাদের বাচাতে পাকিস্তান বিমান বাহিনী জঙ্গি বিমানের সাহায্যে আক্রমন করে। আক্রমন এক ঘণ্টা চলে এতেও তাদের কোন উপকার হয়নি। ঘেরাও এর মধ্যে তারা পালাতে চেষ্টা করে। পাক বাহিনীর এখানে ১৫৫ জন নিহত হয়। জীবিতদের মধ্যে অফিসারই বেশী ছিল। যখন তাদের মাত্র ৪০-৪৫ জন জীবিত ছিল তখন তারা দুটি ডজ গাড়ীতে করে পলায়ন কালে ওসমানের বাহিনী তাদের অনুসরণ করে। শৈলকূপার কাছে রাস্তা কাটা ছিল এটা তারা বুঝতে পারেনি ফলে গাড়ী দুটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। সেখানে কয়েকজন মারা যায় বাকীরা গ্রামের দিকে পলায়নের চেষ্টা করে। গ্রামবাসীরা তাদের ধরে ধরে পিটিয়ে হত্যা করে অস্র জমা দেয়। এক ছেলে একজন সৈন্যকে হত্যা করে তার আঙ্গুল কেটে আঙ্গুল সহ অস্র জমা দেয়। ছেলেটির নাম সুলতান আলী জোয়ারদার। এদিন রাত্রে পাক বাহিনীর লেঃ আতাউল্লাহ ধরা পরে কিন্তু তাকে মারা হয়নি। পরে তাকে ঝিনাইদহে চিকিৎসা করে ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে যশোর থেকে উদ্ধারকারী দল কুষ্টিয়ায় আসতে থাকলে বিশখালিতে ক্যাপ্টেন এআর আজমের বাহিনীর মুখোমুখি হয়। এখানে সংঘর্ষে ২ জন ইপিআর মারা যায় ৫ জন আটক হয়। এ যুদ্ধে প্রায় ২০০ বেসামরিক বাঙ্গালী নিহত হয়। পরে আজমের বাহিনী যশোর সেনানিবাসের ৭ মাইল উত্তরে অবস্থান গ্রহন করে।